ঋগ্বেদ ১০/৭১/২ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

18 December, 2025

ঋগ্বেদ ১০/৭১/২

ঋগ্বেদ ১০/৭১/২ আধিভৌতিক ভাষ্য

সক্তুমিব তিতউনা পুনন্তো য়ত্র ধীরা মনসা বাচমক্রত।

অত্রা সখায়ঃ সখ্যানি জানতে ভদ্রৈষাম্ লক্ষ্মীর্নিহিতাধি বাচি।। (ঋগ্বেদ ১০।৭১।২)

(সক্তুম্, এব) [সুক্তুঃ = সুক্তুঃ সচতের্দুধাবো ভবতি (নিরুক্ত ৪.১০)] অশুদ্ধ মিশ্রিত ছাতু যাকে হাত দিয়ে শুদ্ধ করা কষ্টসাধ্য হয়, তাকে যেভাবে সহজে শুদ্ধ করা হয় (তিতউনা) [তিতউ = তিতউ পরিপবনম্ ভবতি। ততবদ্বা তুন্নবদ্বা তিলমাত্রম্ তুন্নমিতি বা (নিরুক্ত ৮.৯)] সূক্ষ্ম ছিদ্র যুক্ত বিস্তৃত শোধন কর্মকারী ছাঁকনি দিয়ে, (য়ত্র, ধীরাঃ) সেইরূপ যখন অথবা যেখানে অত্যন্ত সত্ত্বগুণ ধারণকারী সৃষ্টির প্রারম্ভে উৎপন্ন ঋষি ধ্যানাবস্থিত অবস্থায় [ধীরাঃ = প্রজ্ঞানবন্তো ধ্যানবন্তঃ (নিরুক্ত ৪.১০)] (মনসা) সমাহিত অন্তঃকরণ দ্বারা (পুনন্তঃ) অন্তরীক্ষস্থ বেদ বাণীকে শুদ্ধ করে (বাচম্, অক্রত) সেই বেদ বাণীকে নিজের অন্তঃকরণে ধারণ করেন। (অত্র, সখায়ঃ) এই বেদবিদ্যার বিষয়ে সব প্রাণীদের সখারূপ হিতচিন্তক সেই ঋষিজন (সখ্যানি, জানতে) [সখা = সমানম্ খ্যাতীতি সখা (উ.কো.৪.১২৮)] যেখানে এমন মানুষ আছেন যারা সকল প্রাণীর প্রতি মিত্রধর্মকে জানেন, সেখানে ঈশ্বরের সহায়তায় বেদমন্ত্র, সেগুলোর পদের অর্থ অর্থাৎ শব্দ এবং অর্থের সম্বন্ধকে পূর্ণ রূপে জেনে যান। (এষাম্, বাচি, অধি) সেই বেদবাণীর মধ্যে (ভদ্রা, লক্ষ্মীঃ) [লক্ষ্মীঃ = লক্ষ্মীর্লাভাদ্বা লক্ষণাদ্বা লক্ষ্যতে চিন্ত্যতে সর্বেণ - স্কন্দস্বামী (নিরুক্ত ৪.১০), ভদ্রম্ = ভদ্রম্ ভগেন ব্যাখ্যাতম্ ভজনীয়ম্ ভূতানামভিদ্রবণীয়ম্ ভবদ্রময়তীতি বা (নিরুক্ত ৪.১০)] সকল প্রাণীর জন্য প্রাপ্ত করার যোগ্য পদার্থ আর চিন্তন অর্থাৎ সেই পদার্থের বিজ্ঞান (নিহিতা) নিহিত থাকে।
.
ভাবার্থ - মানব সৃষ্টি উৎপত্তির সময় এই সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ডে বেদমন্ত্র ব্যাপ্ত থাকে। সেগুলো সম্পূর্ণ অন্তরীক্ষের মধ্যে ব্যাপ্ত থাকে। সৃষ্টির প্রথম প্রজন্মে উৎপন্ন হওয়া চার সর্বশ্রেষ্ঠ ঋষি সমাধিস্থ মনের দ্বারা অন্তরীক্ষ থেকে সেই ঋচাগুলোকে সেইভাবে ছাঁনিয়ে গ্রহণ করে যেভাবে ছাতু বা আটা ছাঁকনি দিয়ে শুদ্ধ করা হয়। যেরূপ ছাঁকনি ছাড়া হাত দিয়ে ছাতু বা আটাকে শুদ্ধ করা কঠিন হয়, সেইরূপ সমাধিস্থ মন ছাড়া অন্তরীক্ষস্থ ঋচাকে গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। এখানে এই উপমা এটাও দর্শায় যে চারজন ঋষির দ্বারা বেদমন্ত্র গ্রহণ করার জন্য এটা সিদ্ধ হয়ে যায় না যে সম্পূর্ণ সৃষ্টির মধ্যে এই সমস্ত মন্ত্রের অতিরিক্ত আর কোনো মন্ত্র ছিল না। যদি এমন হতো, তাহলে ছাঁকনি দিয়ে ছাতু ছাঁনিয়ে নেওয়ার সমান মন্ত্রকে গ্রহণ করার চর্চা হতো না। সেই চারজন ঋষি প্রাণীমাত্রের হিতচিন্তক আর মুক্তি থেকে পুনরাবৃত্ত হয়ে মানুষের মধ্যেও সর্বোচ্চ স্তরের ছিলেন। এইজন্য তাঁরাই মন্ত্রকে গ্রহণ করতে সক্ষম হন। তাঁরা ঈশ্বরের কৃপায় সেই গৃহীত মন্ত্র, সেগুলোর পদ আর সেই পদের অর্থের নিত্য সম্বন্ধকে সম্পূর্ণ রূপে জেনে নেন। সেইসব মন্ত্রের মধ্যে সৃষ্টির সম্পূর্ণ পদার্থকে যথাযথ ভাবে জানার জন্য সম্পূর্ণ বিজ্ঞান নিহিত আছে আর সেই বিজ্ঞান প্রত্যেক মানুষের জন্য সকল প্রকারের লাভ প্রাপ্তকারীও হয়।

প্রত্যেক সৃষ্টির প্রারম্ভে যে চারজন ঋষির দ্বারা আকাশ থেকে বৈদিক ছন্দকে গ্রহণ করা হয়, তাঁদের এই নামই হয়। এই নামগুলো রূঢ় নয়, বরং য়োগরূঢ় হয়।

প্রশ্ন - পরমাত্মা সৃষ্টির আদিতে চারজন পুরুষকেই কেন বেদজ্ঞান দিয়েছেন, স্ত্রীদের কেন দেন নি? এটা কি বৈষম্যের কারণ নয়?
.
উত্তর - আপনি এটা কিভাবে জানলেন যে এই চারজন ঋষি পুরুষই ছিলেন, এরমধ্যে কোনো স্ত্রী ছিলেন না। আপনি কি পাণিনীয় ব্যাকরণের আধারে এদের নাম থেকে লিঙ্গের নির্ধারণ করছেন? তাই যদি হয়, তাহলে আপনার জেনে রাখা উচিত যে ব্যাকরণের নিয়ম আর্ষ গ্রন্থের মধ্যে সর্বত্র সমান রূপে কাজ করে না। সর্বত্র সর্বদা বেদাদি শাস্ত্রের প্রতি নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ভালো নয়।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ১৯/৫৩/৭

কালমহিমোপদেশঃ কালে মনঃ কালে প্রাণঃ কালে নাম সমাহিতম্। কালেন সর্বানন্দন্ত্যাগতেন প্রজা ইমাঃ।। (অথর্ববেদ ১৯।৫৩।৭) পদার্থঃ (কালে)  কালের মধ্যে ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ