আধিভৌতিক ভাষ্য-
য়জ্ঞেন বাচঃ পদবীয়মায়ন্তামন্ববিন্দন্নৃষিষু প্রবিষ্টাম্।
তামাভৃত্যা ব্যদধুঃ পুরুত্রা তাম্ সপ্তরেভা অভি সম্ নবন্তে।। (ঋগ্বেদ ১০.৭১.৩)
.(য়জ্ঞেন) [য়জ্ঞঃ = ব্রহ্ম হি য়জ্ঞঃ (শতপথ ব্রাহ্মণ ৫.৩.২.৪), য়জ্ঞঃ প্রজাপতিঃ (শতপথ ব্রাহ্মণ ১১.৬.৩.৯)] সেই ধীর বিদ্বানজন, যাঁদের চর্চা পূর্ব মন্ত্রের মধ্যে করা হয়েছে, সবার পালক পরব্রহ্ম পরমাত্মার সাক্ষাৎকার দ্বারা অর্থাৎ তাঁর সহায়তায় (বাচঃ, পদবীয়ম্) সেই বেদবাণীর বিভিন্ন পদের মার্গ আর অনুক্রমকে (আয়ন্) জানেন বা প্রাপ্ত করেন ( ঋষিষু, প্রবিষ্টাম্) আকাশস্থ সূক্ষ্ম রশ্মির মধ্যে প্রবেশ হওয়া (তাম্, অনু, অবিন্দন্) সেই বেদবাণীকে অনুক্রমপূর্বক প্রাপ্ত করেন। (তাম্, আভৃত্য) সেই প্রাপ্ত হওয়া বেদবাণীকে নিজের অন্তঃকরণে ধারণ করে (পুরুত্রা, ব্যদধুঃ) সর্বত্র প্রচারিত করেন। (তাম্, সপ্তরেভাঃ) [রেভঃ = স্তোতৃনাম (নিঘন্টু ৩.১৬)] সেই বেদবাণীর মধ্যে সাত প্রকারের ছন্দ (অভি, সম্নবন্তে) [সম্নবন্তে = নবতে, গতিকর্মা (নিঘন্টু ২.১৪)] সবদিক দিয়ে ব্যাপ্ত থাকে।
.
ভাবার্থ - পূর্বোক্ত চার আদি ঋষি যখন ধ্যানাবস্থিত হন আর পরব্রহ্মের সাক্ষাৎকার করেন, তখন তাঁরা অন্তরীক্ষ থেকে আসা ঋচা আর সেগুলোর পদকে ক্রমপূর্বক আসতে অনুভব করেন। তাঁরা ক্রমপূর্বক সেইসব ঋচা আর পদের বিজ্ঞানকেও পূর্ণরূপে জানতে থাকেন। সেই ঋচাগুলো অন্তরীক্ষে বিদ্যমান সূক্ষ্ম ঋষিরশ্মির মধ্যে ব্যাপ্ত থাকে, সেখান থেকে সেই ঋষিগণ সেগুলোকে নিজের অন্তঃকরণে গ্রহণ করেন। এইভাবে নিজের সামর্থ্যের অনুসারে সমস্ত ঋচাকে মহর্ষি ব্রহ্মার মাধ্যমে সর্বত্র প্রচারিত করেন। সেই বেদবাণী প্রধানত সাত ছন্দ যুক্ত হয়। [ সপ্ত = সৃপ্তা সংখ্যা (নিরুক্ত ৪.২৬)] সেইসব ছন্দ সম্পূর্ন আন্তরীক্ষের মধ্যে ছড়িয়ে থাকে আর সর্বত্র এগুলো একে-অপরের দিকে গতিশীল হয়। চারজন ঋষি সেগুলোর মধ্যে বেদের এই ঋচাগুলোকে গ্রহণ করেন।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ