অথর্ববেদ ১৪/১/১৯ (মন্ত্রাঃ ৬-৬৪। বিবাহসংস্কারোপদেশঃ-)
ঋষিঃ — আত্মা। দেৱতা — তৃষ্টুপ্। ছন্দঃ — সবিত্রী, সূর্যা। সূক্তম্ — বিবাহ প্রकরণ সূক্ত।
প্র ত্বাম্ উঞ্চামি বরুণস্য পাশাত্, যেন ত্বা অভধ্নাত্ সবিতা সুশেভাঃ। ঋতস্য যোনৌ সুকৃতস্য লোকে, স্যোনং তে অস্তু সহসংভলায়ৈ॥
(বরুণস্য) বরণ যোগ্য শ্রেষ্ঠ পরমেশ্বর সম্বন্ধী (পাশাৎ) প্রেম-বন্ধন থেকে (ত্বা) হে বধু ! তোমাকে (প্র মুঞ্চামি) আমি মুক্ত করি, (যেন) যে প্রেম-বন্ধন দ্বারা (সুশেবাঃ) উত্তম সুখদাতা (সবিতা) জন্মদাতা পিতা (ত্বা) তোমাকে (অবধ্নাৎ) বন্ধন করেছিল। (ঋতস্য) সত্য নিয়মের (যোনৌ) আমার গৃহে, তথা (সুকৃতস্য) সুকর্মীদের (লোকে) সমাজে, (সহসম্ভলায়ৈ, তে) সম্যগ্ভাষী পতির সাথে বর্তমান তোমার জন্য (স্যোনম্) সদা সুখ (অস্তু) হোক।
[সুশেবাঃ=সু + শেবম্ সুখনাম (নিঘং০ ৩।৬)। যোনিঃ গৃহনাম (নিঘং০ ৩।৪) সম্ভল=সম্ (সম্যক্) + ভল (পরিভাষণে), অর্থাৎ সম্যগ্ভাষী, প্রেমপূর্বক ভাষণকারী পতি (মন্ত্র ৩১)। স্যোনম্ সুখনাম (নিঘং০ ৩।৬)। সহসম্ভলায়ৈ= সম্ভলেন সহ বর্ততে ইতি সহসম্ভলা, তস্যৈ] [ব্যাখ্যা–বরুণ অর্থাৎ সংসারের সম্রাট্ পরমেশ্বরের বন্ধন, সংসারকে বেঁধে রেখেছে। মাতা-পিতা এবং সন্তানদের, পতি এবং পত্নীর পারস্পরিক প্রেমবন্ধনও একটি বন্ধন যার রচনা প্রভু সৃষ্টিতে করে রেখেছেন। এই প্রেমবন্ধনের সত্তা পশুদের, পক্ষীর তথা কীট-পতঙ্গের মধ্যেও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রাণিসৃষ্টির সৃজন হচ্ছে। বর বলে— হে বধু ! এখনও পর্যন্ত তো এই প্রেমবন্ধন দ্বারা তোমার সুখী মাতা-পিতা তোমাকে বেঁধে রেখেছিল, কিন্তু এখন থেকে আমি তোমাকে নিজের প্রেমবন্ধন দ্বারা আবদ্ধ করি। এইভাবে বর নিজের হার্দিক প্রেমের বিশ্বাস বধূকে দেয়। সাথে বর বলে এই নতুন ঘরে সত্যের রাজ্য আছে। এই ঘরে তুমি সদা সুখপূর্বক থাকবে, এবং আমি সদা সম্যগ্ভাষী হয়ে তোমার জন্য সুখদায়ী হবো।] বিশ্বনাথ বিদ্যালঙ্কার জীর টিপ্পণী সহঃ অর্থ
ক্ষেমকরণ ত্রিবেদীকৃত পদার্থ ভাস্যঃ
[হে বধূ !] (ত্বা) তোমাকে (বরুণস্য) প্রতিরোধের (পাশাৎ) বন্ধন থেকে (প্র মুঞ্চামি) আমি [বর] উত্তমরূপে মুক্ত করি, (যেন) যার সাথে (ত্বা) তোমাকে (সুশেবাঃ) অত্যন্ত সেবাযোগ্য (সবিতা) জন্মদাতা পিতা (অবধ্নাৎ) বেঁধেছে। (ঋতস্য) সত্য নিয়মের (যোনৌ) ঘরে এবং (সুকৃতস্য) সুকৃত [পুণ্য কর্মের] (লোকে) সমাজে (সহসম্ভলায়ৈ) সখীদের সহিত বর্তমান (তে) তোমার জন্য (স্যোনম্) আনন্দ (অস্তু) হোক ॥১৯॥
যে কন্যাকে পিতা যোগ্য পতি প্রাপ্তির পূর্বাবস্থা পর্যন্ত ধরে রেখেছিল, তাঁকে পিতার ঘর থেকে প্রসন্নতার সহিত নিয়ে বর প্রেমপূর্বক রাখুক এবং ঘরের সব ধর্মাত্মা বিদ্বান্ স্ত্রী-পুরুষ শ্রেষ্ঠ ব্যবহার করে তাঁকে সুখ প্রদান করুক ॥১৯॥মন্ত্র ১৮ এর টিপ্পণী দেখো ॥
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ