বিষ্ণুর তিন পদ ভূমি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

28 August, 2025

বিষ্ণুর তিন পদ ভূমি

 

বিষ্ণুর তিন পদ (বিষ্ণু অর্থাৎ ব্যাপক পরমাত্মা ঈশ্বর)⛱

বৈদিক ভৌতিকীর মধ্যে দৃশ্য পদার্থকে দেব তথা অদৃশ্য পদার্থকে অসুর বলা হয়। অসুর পদার্থ (কথিত ডার্ক ম্যাটার), আসুরী ঊর্জা (কথিত ডার্ক এনার্জি)॥

ইদং বিষ্ণুবির্চক্রমে ত্রেধা নিদধে পদম্। সমূঢ়ळ्হমস্য পাংসুরে॥ (ঋ০ ১।২২।১৭)

পৌরাণিক ইন্দ্র ও দানব রাজ বলি 👿👇

কাকেশিয়ন ক্ষেত্রে অমৃত-মন্থনের কিছু কাল পর দানবগুরু শুক্রাচার্যের পৌত্র চন্দ্র (সোম) দেবগুরু বৃহস্পতির পত্নী তারা-এর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। এই ক্রমবর্ধমান প্রেমপ্রবাহের উন্মাদনায় চন্দ্র তারা-কে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দেবগুরুর পত্নীর সঙ্গে সংঘটিত এই অশোভন আচরণকে দেবতারা নিজেদের সম্মানের প্রশ্নে পরিণত করেন। "তারা অপহরণ কাণ্ড"-এর ফলে দেব-অসুরদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধকে “তারকাময়” নামক পঞ্চম দেবাসুর সংঘর্ষ হিসেবে জানা যায়। এই যুদ্ধে বিরোচন তার তিন ভ্রাতাসহ ইন্দ্রের হাতে নিহত হয় (মৎস্য পুরাণ ৪৭।৪৯)। 

বিরোচন-বধের পর চন্দ্র যখন তারা-কে ফিরিয়ে দেয়, তখনই উভয় পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্থাপিত হয়। অপহরণের সময় গর্ভবতী হওয়া তারা পরে এক পুত্রের জন্ম দেন, যার নাম ছিল বুধ। বুধের বিবাহ হয় মনুপুত্রী ইলা-র সঙ্গে। ইলা-বুধের পুত্র ছিলেন এল-পুরুরবা, যাঁর বংশ থেকে পশ্চিম এশিয়ার “এল” রাজবংশ ও ভারতের চন্দ্রবংশের সূচনা হয়।

চন্দ্রবংশে যযাতির পুত্র যদু থেকে হৈহয় তথা যদুবংশ, আর পুরু থেকে পৌরব বংশের সূচনা হয়। যদুবংশে জন্ম নেন কালজয়ী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও বড় ভ্রাতা বলরাম, আর পুরুবংশে দুষ্যন্ত, ভরত, কুরু, প্রতীপ, শান্তনু প্রমুখ থেকে কৌরব ও পাণ্ডবেরা জন্মগ্রহণ করেন। মহাভারত যুদ্ধের পর জীবিত থাকা পাণ্ডব বংশের শেষ শাসক ছিলেন ক্ষেমক, যিনি মগধের সম্রাট মহাপদ্মনন্দ দ্বারা নিহত হন।

বিরোচনের পর দৈত্যপতি (দানবরাজ) পদে অধিষ্ঠিত হয় সমুদ্র-মন্থনের নায়ক, তার পরাক্রমশালী পুত্র বলি। সিংহাসনে বসেই তিনি পিতার পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ইন্দ্র (মনোজব)-কে পরাজিত করে দেবলোক দখল করে নেন। এভাবে তিনি সাত পাতালসহ পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপের রাজবংশ জয় করেন ও ‘ত্রিলোকী’ নামে বিখ্যাত হন (মৎস্য পুরাণ ৪৭।৩৬)।

বলি ছিলেন কুশল যোদ্ধা, শাসক ও দানশীল রাজা। বলির অধমজনিত বিজয়কে পরাজয়ে পরিবর্তন করার জন্য তার দূর্বলতা অর্থাৎ দানশীলতাকে লক্ষ্য করে বিষ্ণু দেবতাদের স্বার্থে এক কৌশল নেন। ধর্মনিষ্ট বলি দ্বারা আয়োজিত এক যজ্ঞ অনুষ্ঠানে ইদ্র ক্ষুদ্রাকৃতি ব্রাহ্মণরূপী বামন কে অর্থাৎ তাঁর অবতারকে পাঠান। সেই বিষ্ণু অবতার বলির কাছে তিন পা জমি দান চান। বামন কে বিষ্ণুর অবতার বলার কারন তিনি বিষ্ণু কর্তৃক প্রেরিত ছিলেন। বামন রূপী ঐ যাচকের প্রস্তাব কে বলি তৎক্ষণাৎ মঞ্জুর করেন। এবং তাঁর ইচ্ছিত স্থান মেপে তাঁকে দেওয়ার রাজাজ্ঞা জারী করেন। বামনের এই কুট প্রস্তাব যে দেবতাদের ষড়যন্ত্র তা গুরু শুক্রাচার্য বুঝতে পেরে বলিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্তু তিনি দৈত্যঘাতী নির্ণয়ে ক্রুদ্ধ ও নিরাশ হয়ে শাকদ্বীপ (আরব) চলে যান।সেখানেই শুক্রাচার্য নিজ আরাধ্য শিব জীকে স্থাপিত করে এক ভব্য মন্দির নির্মান করেন, যা কালান্তে 'কাব্য কা মন্দির' বা তদনুরুপ 'কাবা' নামে বিখ্যাত হয়।

এইদিকে, বালির নির্দেশ অনুসারে, বামন এবং তার সহযোগীরা 'তিন পদ (step) ভূমি' ক্রমশ অগ্নিকুণ্ড স্থাপন করে রাক্ষসদের শহর এবং দুর্গ দখল করতে শুরু করে। বালি যখন "তিন পদ" বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তখন বামনের রূপে যাচক (আবেদনকারী) তাকে তিন পদের আশয় বেদ বর্ণিত মন্ত্র থেকে তিনটি স্টেপের অর্থ ব্যাখ্যা করে নিরুত্তর করে দেন (পাদোऽস্য বিশ্বা ভূতানি ত্রিপাদস্যামৃতম্ দিবি- ঋগ্বেদ ১০।৯০।৩)। 

তার বচনবদ্ধতা (প্রতিশ্রুতির) কারণে নিরুপায় হয়ে পড়া বালিকে শেষ পর্যন্ত রাজপ্রাসাদও ত্যাগ করতে হয়েছিল এবং বন্ধু-বান্ধব সহ সাতটি পাতালের মধ্যে একটি পাতাল সুতল (বলখ) এর কঠিন অঞ্চলে আশ্রয় নিতে হয়েছিল (মৎস্য পুরাণ ২৪৬।৭৫)। এভাবে, ত্রিলোক বিজয়ী বালিকে তার জীবনের শেষ দিনগুলি সুতালে অবস্থিত 'বলসুরা' (বালি অসুরের প্রতীকাত্মক নগর, যা কালান্তরে বলখ নামে পরিচিত হয়) এর যন্ত্রণাদায়ক পরিবেশে কাটাতে হয়েছিল। দীর্ঘ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর, ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর এই শহরটিকে পুনর্বাসিত করেন এবং বর্তমানে এটি 'বসরা' নামে পরিচিত। 

মহাপ্রাণ বালির পরাজয়ের পর, দেবগণ (পুরন্দর, আদি ইন্দ্র) তার উত্তরসূরীদের সাথে সাতটি ধারাবাহিক যুদ্ধে লিপ্ত হন, যা 'দেবসুর সংগ্রাম' নামে বিখ্যাত। আডীবক, ত্রিপুর, অন্ধক, বৃত্রঘাতক, ধাত্র, হলাহল এবং কোলাহাল নামক 'দেবাসুর সংগ্রাম' নামে বিখ্যাত হয় (সন্দর্ভঃ মৎস পুরাণ ৪৭।৪৪-৪৫)।

ए॒तावा॑नस्य महि॒मातो॒ ज्यायाँ॑श्च॒ पूरु॑षः । पादो॑ऽस्य॒ विश्वा॑ भू॒तानि॑ त्रि॒पाद॑स्या॒मृतं॑ दि॒वि ॥

यह ब्रह्माण्ड प्रभु की महिमा है ____________ऋग्वेद १०.९०.३

[१] (अस्य) = इस पुरुष की (एतावान् महिमा) = इतनी महिमा है । सारा ब्रह्माण्ड उनके एकदेश में है और सब 'भूत-भाव्य-अमृत' प्राणियों के वे ईश हैं। इस सारे ब्रह्माण्ड में तथा सब प्राणियों प्रभु की ही महिमा दृष्टिगोचर होती है, सूर्यादि पिण्डों को वे ही ज्योति दे रहे हैं, तो बुद्धिमानों की बुद्धि भी वे ही हैं, और तेजस्वियों का तेज भी वे ही हैं । 

[२] वे (पुरुषः) = ब्रह्माण्डनगरी में निवास करनेवाले प्रभु (अतः ज्यायान् च) = इस ब्रह्माण्ड से बड़े हैं, यह सारा ब्रह्माण्ड तो उनके एकदेश में ही स्थित है। प्रभु की तुलना में यह विशाल ब्रह्माण्ड दशांगुल मात्र है। (विश्वाभूतानि) = ये सारे प्राणी (अस्य पादः) = इस प्रभु के चतुर्थांश में ही हैं। यह सारा जन्म-मरण चक्र इस चतुर्थांश में ही चल रहा है । (अस्य त्रिपाद्) = इस प्रभु के तीन अंश तो दिवि अपने द्योतनात्मक रूप में (अमृतम्) = अमृत हैं । उन तीन अंशों में यह जीवों के जन्म ग्रहण व शरीर को छोड़नेरूप मृत्यु का व्यवहार नहीं होता, सो उस त्रिपात् को यहाँ 'अमृत' कहा गया है।

भावार्थ-सारा ब्रह्माण्ड प्रभु की महिमा का प्रतिपादन कर रहा है। वे प्रभु इस ब्रह्माण्ड से बहुत बड़े हैं। यह ब्रह्माण्ड तो प्रभु के एकदेश में ही है।

   

বিষ্ণুর তিন পদ: দেবতা, অসুর ও বালির কাহিনী ⛱

শ্রেণি: পুরাণ, দেবাসুর যুদ্ধ, প্রাচীন ইতিহাস
Keywords: বালি, বামন অবতার, দেবাসুর সংঘর্ষ, চন্দ্রবংশ, পুরাণ


১. প্রাচীন দেবাসুর সংঘর্ষের পটভূমি

  • বৈদিক ভৌতিকীতে দৃশ্য পদার্থকে দেব এবং অদৃশ্য পদার্থকে অসুর বলা হয়।

  • অসুর পদার্থের সমার্থক ডার্ক ম্যাটার এবং অসুরী শক্তির সমার্থক ডার্ক এনার্জি

  • মৎস পুরাণে বর্ণিত যাত্রা অনুযায়ী, দেব-অসুর সংঘর্ষ প্রাচীন সমাজ ও রাজনীতির প্রতিফলন।


২. চন্দ্র ও তারা অপহরণ কাণ্ড

  • প্রেক্ষাপট: অমৃত-মন্থনের কিছু সময় পরে চন্দ্র, দেবগুরু বৃ‌হস্পতির স্ত্রী তারা-কে অপহরণ করেন।

  • তারকাময় যুদ্ধ: অপহরণের কারণে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে পঞ্চম দেবাসুর সংঘর্ষ শুরু হয়।

  • বিরোচনের মৃত্যু: যুদ্ধের সময় বিরোচন ও তার তিন ভাই ইন্দ্রের হাতে নিহত হন।

  • বুধের জন্ম: অপহরণের সময় গর্ভবতী তারা বুধকে জন্ম দেন। বুধের বংশধর এল-পুরুরবা থেকে চন্দ্রবংশ ও পশ্চিম এশিয়ার “এল” রাজবংশের সূচনা।


৩. বালির ক্ষমতাসীনতা ও ত্রিলোক জয়

  • বিরোচনের পর দৈত্যপতি পদে অধিষ্ঠিত হন বালি, যিনি সমুদ্র-মন্থনের নায়ক ছিলেন।

  • সিংহাসনে বসেই ইন্দ্রকে পরাজিত করে ত্রিলোক জয় করেন।

  • বালি ছিলেন কুশল যোদ্ধা, দানশীল ও ধার্মিক রাজা।


৪. বামন অবতার ও তিন পদ ভূমি

  • বিষ্ণুর কৌশল: দেবতাদের স্বার্থে বামন অবতারকে পাঠান।

  • বামনের অনুরোধ: তিন পা জমি চাওয়া।

  • বালির প্রতিক্রিয়া: প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বালি রাজপ্রাসাদও ছেড়ে দিতেই বাধ্য হন।

  • সুতল আশ্রয়: বালি সাতটি পাতালের একটি সুতল (বলখ) অঞ্চলে চলে যান।

  • মন্দির নির্মাণ: শুক্রাচার্য শিবলিঙ্গ স্থাপন করে ‘কাব্য কা মন্দির’ বা ‘কাবা’ নির্মাণ করেন।


৫. দেবাসুর সংগ্রাম ও বালির পরাজয়

  • বালির পরাজয়ের পরে সাতটি ধারাবাহিক যুদ্ধ:

    • আডীবক

    • ত্রিপুর

    • অন্ধক

    • বৃত্রঘাতক

    • ধাত্র

    • হলাহল

    • কোলাহল

  • এই সংঘর্ষের মাধ্যমে দেবতার আধিপত্য পুনঃস্থাপন।


৬. বালির উত্তরাধিকার ও প্রভাব

  • বালির পরাজয় এবং দেবতার বিজয়ের ফলে দেবগণ পুনরায় পৃথিবীতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।

  • দেবাসুর কাহিনী কেবল পুরাণিক গল্প নয়; এটি প্রাচীন সমাজ, রাজনীতি এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।


পাঠকের জন্য নোট:

  • বালির কাহিনী থেকে বোঝা যায় শক্তি, নীতি এবং প্রতিশ্রুতির গুরুত্ব

  • প্রাচীন দেবাসুর যুদ্ধ শুধুমাত্র গল্প নয়, মানব সমাজের রাজনীতি ও শক্তির ব্যবহার শেখার মাধ্যম

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

বৈদিক জ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক রহস্য

  বৈদিক জ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক রহস্য: সৃষ্টির অনন্ত জ্ঞানের খোঁজ আমরা সকলেই বিশ্বাস করি যে এই বিশ্বে একটি সচেতন শক্তি অবশ্যই বিদ্যমান, যা অত্যন...

Post Top Ad

ধন্যবাদ