সংসমিদ্যুভসে বৃষন্নগ্নে বিশ্বান্যর্য আ।
ইळস্পদে সমিধ্যসে স নো বসূন্যা ভর॥ ঋগ্বেদ ১০।১৯১।১
স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজকৃত পদার্থ ভাষ্যঃ (বৃষণ্–অগ্নে) হে সুখের বর্ষা-স্বরূপ, দুঃখ-নাশক পরমাত্মা! (অর্যঃ–বিশ্বানি–ইৎ সন্সম্–আ যুবসে) তুমি, হে স্বামী! সমস্ত ভূতগণ—জড় ও চেতন প্রাণীদের মধ্যে যথাযথভাবে সম্পূর্ণরূপে বিদ্যমান আছো; বিশেষত আমরা মানুষ, যারা তোমার উপাসক—তাদের মধ্যে তুমি যথা-ভাবে প্রতিষ্ঠিত। "সমো দ্বিরুক্তিঃ—‘সমুপোদঃ পাদপূর্ণে’" [অষ্টা ৮।২৬] এই নিয়ম অনুযায়ী, (ইডঃ–পদে সমিধ্য সে) পৃথিবী—অর্থাৎ পার্থিব দেহের পদ, অর্থাৎ হৃদয় বা স্তুতির পদস্থান—অধ্যাত্ম-যজ্ঞে যথাযথভাবে জ্বলমান হয়, প্রজ্বলিত হয়। (সঃ–নঃ–বসুনি–আভর) সেই তুমি আমাদের জন্য শান্তি ও সুখে বাসযোগ্য ঐশ্বর্যময় ধন সম্পদ প্রদান করো॥১॥
পদার্থ (হরিশরণ সিদ্ধান্তলঙ্কার)
[১] হে (বৃষণ্) = আমাদের সকলের উপর সুখের বর্ষণকারী, (অগ্নে) = হে অগ্রগণ্য প্রভু! আপনি (ইৎ) = নিশ্চয়ই (বিশ্বানি সংস্কং যুবসে) = সমস্ত প্রাণীদের সাথে সম্যকভাবে মিলিত হন। আপনি সকলেরই পিতা। এই পিতৃত্বই সকলকে পরস্পরের নিকটে আনয়ন করে। আপনাকে পিতার রূপে স্মরণ করলে সকলে পরস্পর ভ্রাতৃত্বের স্মরণ করে।
[২] (অর্যঃ) = আপনিই সকলের স্বামী। (ইডঃ পদে) = [ইডা = বাণী, বেদবাণী] বেদবাণীর শব্দসমূহে আপনি (আ সমিধ্যসে) = সর্বতোভাবে দীপ্ত হন — “সর্বে বেদাঃ যৎ পদমামনন্তি”, “ঋচো অক্ষরে পরমে ব্যোমন্” ইত্যাদি এরই প্রমাণ।
[৩] (সঃ) = সেই আপনি (নঃ) = আমাদের জন্যে (বসুনি) = বাসস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদার্থ (আ ভর) = প্রাপ্ত করান। আপনিই সকলের প্রভু, আপনিই সকলকে ঐশ্বর্য ও সম্পদ প্রাপ্ত করান। ॥
ভাবার্থ — পরমাত্মা সুখের বর্ষা ঘটান এমন স্বামী; তিনি সমস্ত জড় ও সচেতন সৃষ্টির মধ্যে বিরাজমান। তিনি দেহের বিশেষ স্থান অর্থাৎ হৃদয়ে, অথবা স্তুতির স্থান — আধ্যাত্মিক যজ্ঞে — প্রত্যক্ষভাবে প্রকাশিত হন। তখন তিনি মানুষকে শান্তি ও সুখে স্থিত রাখার জন্য সকল ঐশ্বর্য ও ধন প্রদান করেন ॥১॥ ব্রহ্মমুনি
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ