শ্বেতাশ্বতর ৩/৫ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

29 March, 2024

শ্বেতাশ্বতর ৩/৫

 এখন পরমাত্মার কল্যাণময় স্বরূপের বর্ণনা করছেন- য়া তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাৎপাপকাশিনী। তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভি চাকশীহি॥

শ্বেতাশ্বতর-৩/৫॥
(যজু০ ১৬।২)

পদার্থঃ (রুদ্র) হে দুষ্টদের রোদনকারক পরমাত্মা! তুমি (গিরিশন্ত)১ সত্যোপদেশের বাণী দ্বারা সুখের বিস্তারকারী (তে) তোমার (য়া) যে (অঘোরা) ঘোর উপদ্রব রহিত অর্থাৎ সদা প্রসন্ন (অপাপকাশিনী) সত্য ধর্ম প্রকাশকারী (শিবা) কল্যাণময় (তনূঃ)২ বিস্তৃত স্বরূপ (তয়া) সেই (শন্তময়া) অত্যন্ত শান্তিপ্রদ (তনুবা) বিস্তৃত স্বরূপ দ্বারা (নঃ) আমাদের (অভি চাকশীহি) অবলোকন করো অর্থাৎ আমাদের প্রতি কৃপাদৃষ্টি দান করো ॥

সরলার্থঃ- হে পরমাত্মা! তুমি সত্যোপদেশের বাণী দ্বারা সুখের বিস্তারকারী। তোমার যে সত্য ধর্ম প্রকাশকারী, কল্যাণময়, প্রসন্ন, বিস্তৃত স্বরূপ; সেই অত্যন্ত শান্তিপ্রদ বিস্তৃত স্বরূপ দ্বারা আমাদের প্রতি কৃপাদৃষ্টি দান করো ॥

ব্যাখ্যাঃ পরমাত্মা মানুষদের সুখ প্রদানের জন্য বেদবাণী দ্বারা জ্ঞান দান করেছেন, যাতে আমাদের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হয়। তিনি ধার্মিকদের রক্ষার জন্য সর্বদা দুষ্টদের দণ্ড দিয়ে রোদন করান, এজন্য তিনি রুদ্র। নির্দোষ পুণ্যবান উপাসককে তিনি সর্বদা সুখ প্রদান করেন, কেননা স্বরূপত তিনি সুখস্বরূপ ও নিষ্কলুষ। যেমন সূর্যোদয়ের সময় সমস্ত অন্ধকার দূর হয়ে যায়, তেমনই পরমাত্মার শুদ্ধ স্বরূপের শরণাগত হলে হৃদয়ের সমস্ত পাপপ্রবৃত্তি সমূহ নষ্ট হয়ে যায়। পরমাত্মা যেন নিজের সেই অত্যন্ত কল্যাণময় সুখপ্রদ স্বরূপ দ্বারা আমাদের কৃপা করেন অর্থাৎ আমাদেরকে জ্ঞান-বিজ্ঞান দ্বারা সংযুক্ত করেন, যাতে আমাদের জাগতিক ও পারমার্থিক সুখ লাভ হয় ॥

>টীকাঃ (১) 'গিরা' শব্দের অর্থ, বাণী অথবা স্তুতি। যথা- 'গীরিতি বাঙ্গামসু পঠিতম্' (নিঘন্টু ১১), গির স্বতয়ো গৃণাতে' (নিরুক্ত ১।১০), 'গিরা গীত্যা স্তত্যা' (নিরুক্ত ৬।২৪), 'বাশ্বৈ গী' (শত০ ব্রা০ ৭।২।২৫)। এছাড়া 'পিরি বাচি স্থিতঃ শং তলোজীতে বা" ( মহীধর)। সুতরাং "য়ো গিরিণা সত্যোপদেশেন শং সুখং তলোতি স গিরিশন্ত পরমেশ্বরঃ" যিনি সত্যোপদেশরূপ বাণী দ্বারা সুখের প্রেরণা দান করেন, সেই পরমেশ্বরই গিরিশল্পা।

(২) শ্রুতিতে স্তনু' শব্দের দ্বারা ঈশ্বরের দেহধারী হওয়ার শঙ্কা উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু বেদ ও উপনিষদ যাঁকে 'অকায়ম্', 'অশরীরম্' বলে ঘোষণা করেছে, তাঁর শরীরের কল্পনা কীভাবে করা যেতে পারে? 'তনু বিশ্বারে (তনা০) ধাতোর্লোটি রূপাণি। 'উতশ্চ প্রত্যয়াচ্ছন্দো বা বচনম্' অষ্টা০ ৬।৪।১০৬ [মহাভাস্যোক্ত পাঠ) সূত্রেল ছন্দসি হর্লোপে বিকল্প।” পাণিনীয় ধাতুপাঠ- ১৪৬৪ সূত্রানুসারে, 'তনু বিস্তারে' অর্থাৎ তন্ (বিস্তার করা).. তনু। শতপথ ব্রাহ্মণ অনুসারে, "আত্মা বৈ তনু" (শত০ ব্রা০ ৬/৭।২।৬) অর্থাৎ পরমাত্মার বিস্তৃত স্বরূপ।

য়া তে রুদো শিবা তনূরঘোরাऽপাপকাশিনী।
তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভিচাকশীহি।।
শ্বেতাশ্বতরোপনিষদ-৩/৫

পদার্থ-( রুদ্র) হে রুদ্র দেব! ( তে) তোমার ( যা) যে ( অঘোরা) সৌম্য ( অপাকাশিনী) পাপকে দূরকারী ( শিব) কল্যাণকারী ( তনূঃ) স্বরূপ ( গিরিশন্ত) সকলের হৃদয়রূপী গুহায় বিরাজমান ( তথা) সেই ( শান্তময়া) শান্তি দানকারী ( তনুবা) দিব্য স্বরূপ দ্বারা ( অভিবাচকশীহি) আমাদের হৃদয়কে প্রকাশিত করো।

ব্যাখ্যা-এই এবং পরের দুটি মন্ত্র যজুর্বেদ ১৬ অধ্যায় ২,৩ থেকে এসেছে এগুলিতে বিদ্বানদের বেদের জ্ঞাতা তথা পরমাত্মা নিকট ভক্ত প্রার্থনা করে। হে রুদ্র! দুষ্টোকে রুদন- কারী,সত্যকে সুখ দানকারী তোমার যে সৌস্য কল্যাণকারী তথা যাঁর স্বরণে পাপ ও মন্দের নাশ হয়ে যায় এমনি গিরিশন্ত! গিরৈ স্থিত্বা শম্ সুখ অর্থাৎ যেমন শক্তি পর্বতের অভ্যন্তরে বা যে প্রত্যকের হৃদয়রূপী গুহায় স্থিত শান্ত- সচ্চিদানন্দন স্বরূপ সেই নীতি থেকে সুখের বিস্তারকারী ৪্রভু অভিচাকশীহি অভি-পশ্য-আমাদের-আমাদের দেখো অর্থাৎ আমাদেরও কল্যাণকারী পথে চলতে কৃপা করো।।
( ভাষ্য-বিশ্বম্ভরদেব শাস্ত্রী)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ছান্দোগ্য উপনিষদ

  সামবেদ-তাণ্ড্য শাখার- ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণের অন্তর্গত শঙ্কর ভাষ্য ও বৈদিক ভাষ্য সহঃ পরিচয় ছান্দোগ্য উপনিষৎ সামবেদোক্ত ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণের অ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ