গীতা ১/৪২ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

29 March, 2024

গীতা ১/৪২

 সংকরো নরকায়ৈব কুলম্নানাং কুলস্য চ।

পতন্তি পিতরো হ্যেষাং লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ ।।

গীতা-১/৪২

পদ০ – সংকরঃ। নরকায়। এব। কুলম্নানাম্। কুলস্য। চ। পতন্তি। পিতরঃ। হি। এষাম্। লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ ।।
পদার্থ –( সংকর)-বর্ণসংকর (কুলগ্নানাং, কুলস্য, চ)= কুলের নাশকারী- দের এবং কুলের (নরকায়, এব) -নরকগামী হয় এবং (লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ)= যাদের খাদ্য-জলাদির ক্রিয়া দূরীভূত হয়েছে এরূপ (এষাং, কুলয়ানাম্)-এই কুলের নাশকারীরা (পিতরঃ)= পিতৃপুরুষগণ (পতন্তি)-নরকে পতিত হন ।।

ভাষ্য – "'লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ"' শব্দের বহু আধুনিক লোক এই অর্থ করেন যে, উক্ত শব্দের অর্থ মৃতক শ্রাদ্ধের, কিন্তু এই অর্থ এই শব্দ থেকে নির্গত হয় না, কারণ বর্ণসংকরের উৎপত্তি অর্থাৎ ব্যভিচার থেকে উৎপন্ন হওয়া সন্ততি নিজের বৃদ্ধ পুরুষের সম্মান করবে না, এইজন্য "'লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ"' এ পিতরের বিশেষণ দেওয়া হয়েছে এবং এই ভাবকেই পরবর্তী শ্লোকে প্রকট করা হয়েছে যে, বর্ণসংকরকারী দোষ থেকেই জাতি নষ্ট হয়, মৃতকশ্রাদ্ধ না করলে হয় না। যদি পুত্রের মৃতক শ্রাদ্ধের অধিকার না থাকলে জাতি নষ্ট হয় তবে স্বামী শংকরাচার্যাদি যেসব সন্ন্যাসী হয়েছেন তাঁদের পিতৃব্যদেরও নরকবাস হওয়া উচিত, কিন্তু এ স্থলে মৃতক শ্রাদ্ধবাদীদের এই অভিমত নয় যে, মৃতক শ্রাদ্ধের অভাবেই পিতরগণ নরকে পতিত হন ।।

এবং বিষয় এই যে, যদি এখানে পিতৃ শব্দ দ্বারা মৃত পিতরের গ্রহণ হত তবে যারা ধর্মযুদ্ধে নিহত হয়েছে সে কিভাবে নরকে পতিত হবে! যদি মৃত ক শ্রাদ্ধ না করানোই মৃত পিতরদের নরকের হেতু হয় তবে ধর্মযুদ্ধাদির ফল তুচ্ছ হয়ে যাবে, এবং তারপর "ধর্য্যাদ্ধি যুদ্ধাচ্ছুেয়োন্যৎ ক্ষত্রিয়স্য ন বিদ্যতে" গীতা ২/৩১ ইত্যাদি শ্লোক নিষ্ফল হয়ে যাবে, এর দ্বারা এই সার নির্গত হয় যে, এখানে বর্ণসংকরের উপরেই গ্রন্থের তাৎপর্য, যদি এর সঠিক অর্থ করা হয় যে, '"পিণ্ডোদকক্রিয়াঃ"' দ্বারা তাৎপর্য সেই ক্রিয়ারই যা আধুনিক গ্রন্থকারগণ মৃত পিতরদের নিমিত্ত মেনেছেন তবে এর উত্তর এই হল যে, মৃতক শ্রাদ্ধবাদীদের মতে ক্ষেত্রজ পুত্রেরও পিন্ডদান দেওয়ার অধিকার রয়েছে তবে পিতর কিভাবে নরকে পতিত হবে? যদি এ বলা হয় যে, ক্ষেত্রজের তো অধিকার রয়েছে কিন্তু বর্ণসংকর ক্ষেত্রজের নেই? তবে উত্তর হল এই যে, ব্যাসজির নিয়োগে যেখানে পাণ্ডু আদির উৎপত্তি স্বীকার করা হয়েছে সেখানে ব্রাহ্মণ এবং ক্ষত্রিয়দের সম্বন্ধে বর্ণসংকর নয় কেন? অতএব বাস্তবে এর অর্থ হল যে, ব্যভিচার দোষ থেকে যে সন্ততি উৎপন্ন হয় তাকে 'বর্ণসংকর' বলা হয়, এবং সেই সংকরদের পিতর এইজন্য নরকে পতিত হয় যে, তারা নিজ বয়স্কদের যথাযোগ্য সৎকার করে না অর্থাৎ সেই বৃদ্ধ পিতরদের জীবিত অবস্থায় সেবা না হওয়াই তার নরক- পাত।

( ভাষ্য-শ্রী পণ্ডিত আর্যমুনি পরিব্রাজক)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ছান্দোগ্য উপনিষদ

  সামবেদ-তাণ্ড্য শাখার- ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণের অন্তর্গত শঙ্কর ভাষ্য ও বৈদিক ভাষ্য সহঃ পরিচয় ছান্দোগ্য উপনিষৎ সামবেদোক্ত ছান্দোগ্য ব্রাহ্মণের অ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ