কোনোপোনিষদ ৩/২ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

24 October, 2023

কোনোপোনিষদ ৩/২

 তদ্ধৈষাং বিজজ্ঞৌ তেভ্যো হ প্রাদুর্বভূব। তন্নব্যজান্নত কিমিদং যক্ষমিতি।।

কোনোপোনিষদ-৩/২
পদার্থ-( তত্) সেই ব্রহ্ম ( হ) নিশ্চয় করে ( এষাম্) অগ্নি আদি দেবতাদের চেষ্টাকে ( বিজজ্ঞৌ) সর্বজ্ঞভাব থেকে জানতেন। ( তেভ্যঃ) এবং তাদের [ অহঙ্কার যা মিথ্যা জ্ঞানকে সমাপ্ত করার জন্য ] ( হ) নিশ্চয় থেকে ( প্রাদুর্বভূব) ব্রহ্ম প্রকট হলেন। তারা দেব ( তত্) সেই ব্রহ্মকে ( ন,ব্যজান্নত) জানতে পারে না যে ( ইদম্,যক্ষম্) এই অপ্রতিম তেজযুক্ত যক্ষ ( কিম্,ইতি) কে।
ভাবার্থ-এখানে ব্রহ্মের যক্ষ রূপে প্রকট হএয়া এবং অগ্নি আদি দেবতাগণ তাঁকে জানে না,এক আলঙ্কারিক বর্ণনা যথার্থ নয়। ব্রহ্ম এক সর্বব্যাপক চেতন সত্ত্বা,তাঁকে অগ্নি আদি জড় দেবতা কদাপি জানতেও পারে না। যেমন মণ্ডকোপনিষদে পরমাত্মার মুখ,নেত্রাদির আলঙ্কারিক বর্ণনা করা হয়েছে,তেমনই এখানেও বুঝা উচিত। এই আখ্যায়িকার এক ভাব এটাও হয় যে শরীরেও পঞ্চভূত কার্যকর আছে। যখন জীব পরমব্রহ্মের উপাসনা থেকে অদ্ভূত তেজ বা সামর্থ্য প্রাপ্ত করা হয়,তখন অগ্নি আদির কার্য নেত্রাদি ইন্দ্রিয়াতে এমন গর্ব উৎপত্তি হয়ে যায় যে এই তেজ বা সক্তি আমাদেরই। সেই অহঙ্কারকে দূর কারার জন্যও এই আখ্যায়িকা উৎপত্তি হয়েছে। ব্রহ্ম নিরাকার হওয়ায় তাঁর শরীরধারী হয়ে সংবাদ করা কদাপি সম্ভব নয়, পুনরপি এখানে আখ্যায়িকার রূপে ব্রহ্মের সর্বোকৃষ্টতার জ্ঞান করার জন্য বর্ণনা করা হয়েছে। কারণ আখ্যায়িকার দ্বারা কঠিন বিষয়ও সরল বা সুগম হয়ে যায়।
আলঙ্কারিক আখ্যায়িকার স্পষ্টকরণ-
এই সমস্ত সংসার প্রকৃতির বিকার। এটা স্বয়ং না তো উৎপত্তি হতে পারে এবং না বিকার হতে পারে। এর রচয়িতা তথা প্রলয়কারী পরমব্রহ্ম। অতঃ অগ্নি আদি দেবতাদের মধ্যে ব্রহ্মের বিজয়=মহত্ত্ব অধিক। পরন্তু পরমব্রহ্ম ইন্দ্রিয়াগোচর,সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তথা সর্বত্র ব্যাপক সত্তা,তাঁকে জানা সহজ না হওয়ায় অনাত্মজ্ঞানী ভৌতিক অগ্নি আদি জড় দেবতাকেই উৎকৃষ্ট মনে করা পরমব্রহ্মকে মান্যতা থেকে অস্বীকার করা। এমন অনাত্মবাদি নাস্তিক মানুষকে বুঝানোর জন্য উপনিষদকার এই আলঙ্কারিক গাথারূপে বর্ণনা করেছেন। অগ্নি আদি দেবতাদের সম্মুখ ব্রহ্ম তেজস্বী যক্ষরূপে প্রকট হয়েছিলেন দেবতা তাঁকে না জানতে পারে। সকল দেবতাগণ মিলে অগ্নি দেবকে পাঠালেন যক্ষ দেবকে জানার জন্য তুমি প্রকাশমান হওয়ায় যক্ষকে জানতে পারবে। অগ্নি যক্ষের নিকট গেলেন এবং যক্ষের জিজ্ঞাসার উপর সগর্বে উত্তর দিলেন যে আমি সকলকে পোড়ানোর সামর্থ্য রাখি অগ্নি ও প্রত্যেক উৎপন্ন পদার্থে বিদ্যমান হওয়ায় "জাতবেদাঃ" হই। কিন্তু যক্ষের খড়কেও পোড়াতে না পেরে এবং নিরাশ হয়ে ফিরে আসে। তারপর দেবতগণ বায়ুর নিকট প্রার্থনা করলেন যে তুমি অনেক বলবান বা গতিশীল তুমি অনুসন্ধান করো যে কে এই যক্ষ। কিন্তু যক্ষের নিকট গিয়ে বায়ুও শক্তিহীনই থাকে এবং ক্ষুদ্র খড়ও উড়িয়ে দিতে পারেনি।বায়ুও নিরাশ হয়ে ফিরে আসে। এখানে অগ্নি ও বায়ুকে পাঠানোর আশয় এই হয় যে সংসারে উভই প্রমুখ শক্তি আদি আছে-এক প্রকাশ ও দুই গতি। এদের আশ্রয় থেকে প্রত্যেক বস্তুকে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু পরমব্রহ্মকে প্রাপ্ত করাতে যে উভয় শক্তি আদিও তুচ্ছ বা অসমর্থ। অগ্নি ভৌতিক পদার্থের মধ্যে ব্যাপক হয়েও ভিন্ন ব্যক্তরূপে এসে অনুসন্ধান করেও পোড়াতে পারে না। এই প্রকার বায়ুও ব্যক্তাবস্থায় এসেই তৃনকে উড়াতে পারে, অন্যথা নয়। এবং অব্যক্ত থেকে ব্যক্তাবস্থায় অগ্নি আদিকে পরমব্রহ্মই করেন। যা আছে এদের সামর্থ্য,সেই ব্রহ্ম থেকে প্রদত্ত। অতঃ ব্রহ্মের মহিমা অপার তথা বিলক্ষণ। পুনঃ দেবতাগণ ইন্দ্র=জীবাত্মাকে যক্ষের নিকট পাঠালেন। যক্ষ ইন্দ্রকে দেখার পর অন্তর্ধান হয়ে যায়। এতে এক রহস্য যে যক্ষ অগ্নি তথা বায়ুকে দেখার পর গোপন নয়, পুনঃ ইন্দ্রকে দেখার পর কি করে গোপন? অগ্নি বা বায়ু জড় হওয়ায় জানতে অসমর্থ ছিলো,কিন্তু ইন্দ্র=জীবাত্মা চেতন এবং জ্ঞান-গুণযুক্ত হয়েও সংসারে কলা কৌশলকে উৎপন্ন করে গর্ব দ্বারা পূর্ণ ছিলো। ব্রহ্মের গোপনীয় ভাব এই যে অহঙ্কার যুক্ত জীবাত্মাও ব্রহ্মকে জানতে পারে না। যখন সে যোগ-সাধনাদি দ্বারা দিব্য বিভূতি সম্পন্ন হয়ে যায় এবং উমা=ব্রহ্মবিদ্যা দ্বারা প্রজ্ঞাকে প্রাপ্ত করা হয়,তখন যথারূপ ব্রহ্মকে জানতে সমর্থ হয়ে যায়।।
( ভাষ্য-পণ্ডিত রাজবীর শাস্ত্রী)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ঋগ্বেদ ১/৯০/৯

  ওম্ শং নো মিত্রঃ শং বরুণঃ শং নো ভবত্বর্যমা। শং ন ইন্দ্রো বৃহস্পতিঃ শং নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ॥ ঋগ্বেদ ১।৯০।৯॥ - হে সচ্চিদানন্দানন্তস্বরূপ, হে ন...

Post Top Ad

ধন্যবাদ