নবী মুহাম্মদের কমবয়সী স্ত্রী আয়িশার কাছ থেকেও জানা যায়, ভয়ঙ্কর কষ্টকর মৃত্যু হয়েছে নবী মুহাম্মদের [সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫২৪৩, আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৬৪৬] মুহাম্মদের করুণ মৃত্যুই প্রমাণ করে তিনি নবী ছিলেন না.. মিথ্যাবাদীই ছিলেন !!
ইছলাম মতে মহাবিশ্বের স্রষ্টা সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের সর্বাপেক্ষা প্রিয় মানুষ, সর্বাপেক্ষা প্রিয় রাসুল নবী মুহাম্মদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিলঃ
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)হাদিস নম্বরঃ (4094) অধ্যায়ঃ ৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান) (كتاب المغازى)
নাবী (সাঃ) এর রোগ ও তাঁর ওফাত। মহান আল্লাহর বাণীঃ আপনিতো মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। এরপর কিয়ামত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে বাক-বিতন্ডা করবে (৩৯ঃ ৩০,৩১) ইউনুস (রহঃ) যুহরী ও উরওয়া (রহঃ) সুত্রে বলেন, আয়শা (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, হে আয়শা! আমি খায়বারে (বিষযুক্ত) যে খাদ্য ভক্ষণ করেছিলাম, আমি সর্বদা তার যন্ত্রণা অনুভব করছি। আর এখন সেই সময় আগত, যখন সে বিষক্রিয়ার আমার প্রাণবায়ু বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে
হাদিসটি পাবেন সহিহ বুখারীতে
সহিহ বুখারী। ইসলামিক ফাউন্ডেশন। সপ্তম খণ্ড। পৃষ্ঠা ২৩৩, ২৩৪। অনুচ্ছেদ ২২৪৭
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৬২/ রোগীদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাম্বারঃ ৫২৪৩,
আন্তর্জাতিক নাম্বারঃ ৫৬৪৬
৫২৪৩। কাবীসা (রহঃ) ও বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
নবী মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমাও নবীর মৃত্যু যন্ত্রণায় কষ্ট দেখে কষ্ট পেতেন। কী প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে নবীর মৃত্যু হয়েছে, এই হাদিস থেকেই তা বোঝা যায় [সুনানে ইবনে মাজাহ, তাওহীদ পাবলিকেশন,
হাদিস নম্বরঃ ১৬২৯]-
গ্রন্থের নামঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
হাদিস নম্বরঃ (1629)
অধ্যায়ঃ ৬/ জানাযা
পাবলিশারঃ তাওহীদ পাবলিকেশন
পরিচ্ছদঃ ৬/৬৫. নাবী ﷺ -এর ইনতিকাল ও তাঁর কাফন-দাফন।
৩/১৬২৯। আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যু যন্ত্রণা তীব্রভাবে অনুভব করেন, তখন ফাতেমাহ (রাঃ) বলেন, হায় আমার আব্বার কত কষ্ট। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আজকের দিনের পরে তোমার আব্বার আর কোন কষ্ট থাকবে না। তোমার আব্বার নিকট এমন জিনিস উপস্থিত হয়েছে, যা কিয়ামাত পর্যন্ত কাউকে ছাড়বে না।
সহীহুল বুখারী ৪৪৬২, আহমাদ ১৬০২৬, সহীহাহ ১৬৩৮, মুখতাসার শামাযিল ৩৩৪, বুখারী শেষ বাক্য বাদ দিয়ে। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়েশাও বলেছেন, নবীর মৃত্যু যন্ত্রণা ছিল ভয়াবহ। এত কষ্টই নবী পেয়েছেন, যে আয়েশা এরপরে আর কারো মৃত্যু সহজ হতে দেখলে ইর্ষাকাতর হতেন না [
সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৯৮১ ]
গ্রন্থের নামঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ (981) অধ্যায়ঃ ১০/ কাফন-দাফন, পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পরিচ্ছদঃ মৃত্যুর সময় কষ্ট হওয়া।
৯৮১. হাসান ইবনুুস সাববাহ আল-বাগদাদী (রহঃ) …… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, মৃত্যুর সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যে কষ্ট হতে দেখেছি এরপর কারো মৃত্যুর সময় আসান হতে দেখতে আমার আর কোন ঈর্ষা হয় না। – মুখতাসার শামাইল মুহাম্মাদিয়া ৩২৫, বুখারি, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৯৭৯ (আল মাদানী প্রকাশনী)
রাবী বলেন, আমি এই হাদিস সম্পর্কে আবূ যুরআ (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, বলেছিলাম, রাবী আব্দুর রাহমান ইবনুল আলা কে? তিনি বললেন, ইনি হলেন আলা ইবনুল লাজলাজ। তাঁকে এইরূপেই আমরা জানি।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিসটি পাবেন তিরমিযী শরীফে [সহিহ আত-তিরমিযী । হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী। তাহক্বীক আল্লামা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী।। দ্বিতীয় খণ্ড। পৃষ্ঠা ৩০৪। হাদিস নম্বর ৯৭৯]
বলা বাহুল্য, হযরত মুহাম্মদের মৃত্যু যেকোন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর চাইতে বহুগুণ যন্ত্রণাদায়ক হয়েছিল, তা এই হাদিসগুলো থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। সূনান সানাঈ শরীফ থেকে আরেকটি হাদিস পড়ে নিই-
গ্রন্থের নামঃ সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
অধ্যায়ঃ ২১/ জানাজা
পরিচ্ছেদঃ ৬/ মৃত্যু যন্ত্রণা
১৮৩৩। আমর ইবনু মানসূর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুকালীন সময়ে তার মাথা আমার থুতনি এবং গলদেশের মাঝখানে ছিল। তার মৃত্যু যন্ত্রণা দর্শনের পর আমি অন্য কারো মৃত্যু যন্ত্রণা খারাপ মনে করি না।
(সহীহ, মুখতাসার শামাইল ৩২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
উপসংহার
সবচাইতে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এইরকম কষ্টকর মৃত্যুশয্যাতেও নবী মুহাম্মদের ফুলের মত সুন্দর চরিত্র নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েন নি নবীর প্রিয় স্ত্রী আয়িশা। নবীর সিরাত গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মৃত্যুশয্যাতেও আয়িশা নবীকে বলছেন, নবীর আগে যদি আয়িশার মৃত্যু হতো, তাহলে নবী আয়িশাকে দাফন করেই আরেক বিবি নিয়ে আয়িশার ঘরেই আরেক বিবি তুলতেন। অর্থাৎ, নবীর চরিত্র আয়িশা খুব ভালভাবেই জানতেন এবং বুঝতেন [সীরাতুন নবী, ইবনে হিশাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, সম্পাদনা পরিষদের তত্ত্বাবধানে অনুদিত, চতুর্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩১৩] ।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ