যত মত তত পথ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

26 November, 2020

যত মত তত পথ

হিন্দু গুরু, নেতারা যে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে তা মিথ্যাচার, প্রতারণা করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

সীমাবদ্ধ দেহ সীমাবদ্ধ মনের গন্ডী এবং মনের বন্ধন কাটিয়ে মুক্তআত্মা দিয়ে পরমাত্মাকে অনুভব করার পথ একটাই। "নান্যপন্থা বিদ্যতে অয়নায়"[नान्यः पन्था॑ विद्य॒तेऽय॑नाय  যজুর্বেদ ৩১।১৮] বেদ উপনিষদ যে ব্রহ্ম পরব্রহ্মভূমির কথা বলে গেছেন সেখানে তাঁরা একটা পার্টিকুলার পথই ইঙ্গিত করেছেন এবং দৃঢ়কন্ঠে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন সঠিক পথ মাত্র একটাই। যাঁরা সামান্য দৃষ্টি দিয়ে তত্ত্বোপদেশ ঝাড়তে গেছেন জ্ঞানের অপরিপক্ক অবস্থায় তাঁরাই বলেছেন "#যতমতততপথ" !! আর সাধারন অননুভবী লোক এই উক্তিকে অমৃত-উপদেশ বলে মাথায় তুলে নাচছেন। মন এবং আত্মার মধ্যেও আকাশ পাতাল তফাৎ ! যত মত তত পথে ঘুরপাক না খেয়ে সত্য সনাতন বৈদিক মত বিচার পূর্বক গ্রহণ করাই উচিত। যদি নানা পথ সঠিক হতো তবে গদাধর মশায় তো ভৈরবীকে পাঁচসিকা পয়সা দিয়ে বীরভাবের সাধন, যোনিমন্থন ইত্যাদি তন্ত্রসাধনার নামে নানা জঘন্য ক্রিয়া কলাপ করেছিলেন [ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ দ্বিতীয় খন্ড]। এই ধরনের কোন পথ সঠিক নয়..তোতাপুরীর কাছে ব্রহ্মদীক্ষা লাভের পর তিনি নিজেই এই সব মতকে "খিড়কি দোরের সাধনা" বলেছিলেন।
"যত-মত তত-পথ" গদাধর মহাশয়েরঅভিজ্ঞতাসঞ্জাত সত্য নয়, একটা ভাববাদী ঘোষনা মাত্র। তাঁর নামে সেকুভাই বোনেরা আত্মঘাতী আবেগে সত্য থেকে বহুদূরে চলে যাচ্ছে..কেউ যুক্তির আলোয় সত্য দেখার চেষ্টা করছে না।
গদাধর (রামকৃষ্ণ) বাবু তো ইছলাম মতে দীক্ষা নিয়েছিলেন গোবিন্দ রায়ের কাছে। প্রকৃতপক্ষে ইছলামে দীক্ষা বলে কিছু হয় না। ইসলামে গোমালস ভক্ষণ বাধ্যতামূলক নয়, কিন্তু ইসলামী সাধনায় ভীষণ গরু খেতে ইচ্ছে হয়েছিলো তাঁর। এই ইচ্ছে কেউ প্রতিরোধ করতে পারেন নি শেষ পর্যন্ত ভক্তরাই গোমালস খেতে দিয়েছেন.. পচা,গলা গোমাংস[ রামকৃষ্ণ পুঁথি গ্রন্থ"ইসলাম সাধন]
ইছলামে অপরিহার্য্য ছুন্নতে তাঁর কোন আগ্রহ ছিল কিনা কেউ কিছু লিখে রাখেননি। কামভোগ ইছলামে প্রায় যথেচ্ছ। ইছলাম সাধনার সময় কিন্তু গদায়ের একবারো নিজ স্ত্রীর কাছে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না এ বিষয়ে কেউ আলোচনাও করেনি। দাঁড়িওয়ালা এক জ্যোতির্ময় পুরুষ রামকৃষ্ণে মিলিয়ে গেলেন এই হ'ল তাঁর ইছলাম সাধনার সিদ্ধি। ইছলামে কিন্তু এইধরনের সিদ্ধির কথা স্বীকার করে না। দাড়িওয়ালা লোকটি কি জহরত মহম্মদ বা কোন ফেরেস্তা নাকি তালা মশায় ? ঝোকের মাথায় তিনি অনেক কিছু করেছেন ও বলেছেন। খৃষ্টীয় মতে তাঁর সাধনার কতা অত্যন্ত বিতর্কিত, ইছলামের সময় তিনি লুঙ্গি পরে মসজিদে গেছেন.. এই সময় তাও হয়নি। তিনি কোন চার্চে যাননি, কোন ফাদার তাঁর মাথায় জর্ডের জল ছিটিয়ে তাঁকে ব্যাপ্টাইজ করেন নি। এক খৃষ্টভক্তের কাছে বাইবেলের উটপাটাং গল্প শুনে..পুরীর যদু মল্লিকের বাগানবাড়ীতে দেওয়ালে যীশুর মূর্ত্তি দেখে ভাবোন্মাদ হয়ে গিয়েছিলেন। তখনও যীশুর ফেক মূর্ত্তি মধ্যে থেকে একটা জ্যোতি বেরিয়ে গদায়ের ভেতর প্রবেশ পরে কালী ভুলে যীশুর নাম গুণগান শুরু করেছিলেন। খৃষ্টমত ও এই ধরনের কোন সিদ্ধির কথা স্বীকার করে না..জীবিত অবস্থায় ঈশ্বর দর্শন খৃষ্টের মতে সম্ভব নয়।

তথাকথিত অবতার, হিন্দু ধর্মগুরুরা বলে ধর্ম সবই সমান।”
কিন্তু ইসলাম কি বলেইসলামের আকর গ্রন্থ কোরান কি? বলে...
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম(:১৯)
অর্থাৎ আল্লাহ বলেনঃ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন মতবাদ/ধর্ম কোনো লোকের কাছ থেকে আল্লাহ কবূল(গ্রহণকরবেন না নবী  রাসূল মুহাম্মদ রিসালাতের মাধ্যমে অন্যান্য ধর্মের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।(১.)

তিনিই নিজ রাসূলকে হেদায়াত  সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেনঅন্য সমস্ত দ্বীনের উপর তাকে জয়যুক্ত করার জন্য আর(এরসাক্ষ্য দানের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। (৪৮:২৮)
অর্থাৎ ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ্ মনোনীত একমাত্র সত্য দ্বীন(ধর্ম) আর ইসলাম আগমনের মধ্যে দিয়ে অন্য সব ধর্ম বাতিল হয়ে গেছে।

“রাসূলুল্লাহ এবং তাঁর সাহাবীবর্গ(রাঃ) ‘লাব্বাইক’ ধ্বনি উচ্চারণ করতে করতে শহরে প্রবেশ করেন। তিনি তাঁর কাসওয়া নামক উষ্ট্রীর উপর আরোহণ করে চলছিলেন, যার উপর তিনি হুদাইবিয়ার দিন আরোহণ করেছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা আনসারী(রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ উষ্ট্রীর লাগাম ধরে ছিলেন এবং নিম্নের কবিতাটি পাঠ করছিলেনঃ তাঁর নামে, যাঁর দ্বীন ছাড়া কোন দ্বীন নেই। (অর্থাৎ অন্য কোন দ্বীন(ধর্ম) গ্রহণযোগ্য নয়) তাঁর নামে, মুহাম্মদ যাঁর রাসূল। হে কাফিরদের সন্তানেরা! তোমরা তাঁর পথ হতে সরে গিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর কর। আজ আমরা তাঁর প্রত্যাবর্তনের সময় তোমাদের ঐ মারই মারব, যে মার তাঁর আগমনের সময় মেরেছিলাম। এমন মার(প্রহার) যা মস্তিষ্ককে ওর ঠিকানা হতে সরিয়ে দিবে এবং বন্ধুকে বন্ধুর কথা ভুলিয়ে দিবে।”(২.)
এ কথা টা বলা হয়েছে সে সময়ের মূর্তি পূজক দের উদ্দেশ্যে, তাদেরকে বলা হয়েছে ইসলাম ছাড়া আর কোন দ্বীন নাই, তোমাদের দ্বীন(ধর্ম) বাতিল, এখন এখান থেকে সরে যাও আর না হলে এমন মাইর দেব, মাইরের চোটে বন্ধুদের কথা শুদ্ধ ভুলে যাবে।

আল্লাহ তা‘আলা এটাই চান যে, সারা দুরিয়ায় মুসলিমদের মধ্যে ও মুশরিকদের মধ্যে দ্বীন নামে যত কিছু রয়েছে সবগুলোর উপরই স্বীয় দ্বীনকে(ইসলামকে) জয়যুক্ত করবেন।(৩.)

সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারীরা বলে “ধর্ম সবই সমান” কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ধর্ম সবই সমান হয় কি করে? কারন যেখানে কোরান বলে, ইসলাম একমাত্র সত্য ধর্ম; অন্য সব ধর্ম অগ্রহণীয়, মিথ্যা ও বাতিল। হিন্দু ধর্মগুরুরা ইসলামকে যদি ঈশ্বর প্রদত্ত সত্য ধর্ম বলে মেনে নেয়; তাহলে তারা কোন যুক্তিতে একই সাথে হিন্দু ধর্মকেও সত্য বলে গ্রহণ করতে পারে? কারন কোরানের আলোকে, ইসলামকে সত্য হিসাবে গ্রহণ করলে, অন্য কোন ধর্মকে, অর্থাৎ হিন্দু ধর্মকেও পালন করার এবং সত্য ধর্ম বলে গ্রহণ করার কোন সুযোগ নাই। ধরুন! কোরান পড়ে আমি যদি, ইসলামকে সত্য হিসাবে মেনে নি, তবে আমাকে একই সাথে এটাও মেনে নিতে হবে, অন্য সব ধর্ম মিথ্যা এবং এগুলো আল্লাহ্ কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। যদি ধর্ম সবই সমান হত তবে আল্লাহ কখনো বলতো না একমাত্র দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। সুতরাং (ধর্মগুরুরা) তারা যে বলে হিন্দু ধর্ম যেমন সত্য, ইসলামও তেমনি সত্য… ধর্ম; ধর্ম সবই সমান, শুধু আমাদের দেখার এবং বুঝার ভুল এই প্রলাপবাক্য গুলো মিথ্যাচার আর ভাঁওতাবাজি করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

হিন্দু ধর্মগুরু বলে...  “ঈশ্বর কে বিভিন্ন নাম দিয়ে লোকে ডাকে। কেউ বলে গড, কেউ বলে আল্লাহ, কেউ বলে কৃষ্ণ, কেউ বলে শিব। যেমন পুকুরে জল আছে, একঘাটের লোক বলছে জল, আর একঘাটের লোক বলছে ওয়াটার, আর একঘাটের লোক বলছে পানি, হিন্দু বলছে জল, খ্রীষ্টান বলছে ওয়াটার, মুসলমান বলছে পানি, কিন্তু বস্তু এক। এক-একটি ধর্মের মত এক-একটি পথ, ঈশ্বরের দিকে লয়ে যায়। যেমন নদী নানাদিক থেকে এসে সাগরসঙ্গমে মিলিত হয়।” তার মানে ঈশ্বর-আল্লা একবিভিন্ন ধর্ম হচ্ছে তার কাছে পৌছানোর নানা পথযত মত তত পথ, অর্থাৎ হিন্দু এবং ইসলাম যেকোন ধর্ম বা পথে ঈশ্বরের কাছে পৌছানো যায়। কিন্তু ইসলাম কি সে কথা বলে? ইসলাম মতে কি কেউ হিন্দু ধর্মের পথে আল্লাহ্ কাছে পৌছাতে পারবে? কেউ যদি ইসলাম ত্যাগ করে অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করতে চায়তাবে সেটা কি আল্লাহ গ্রহণ করবেনউত্তর হচ্ছে নাআল্লাহ বলেন
আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন(ধর্ম) গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল(গ্রহণকরা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত(:৮৫)
অর্থাৎ একমাত্র ইসলামের মাধ্যমে আল্লাহ্ কাছে পৌঁছানো যায় অন্য কোন ধর্ম মতে নয়
তাহলে এক-একটি ধর্মের মত এক-একটি পথ; সব ধর্মের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানো যায়তাদের এই ধরণের বক্তব্য গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারন হিন্দু ধর্মের মাধ্যমে কখনো আল্লাহ্ কাছে পৌছানো যাবে না, আল্লাহ্ কাছে পৌছাতে হলে একমাত্র ইসলামকে গ্রহণ করতে হবে; একি ভাবে ইসলামের মাধ্যমে কখনো ঈশ্বর, ব্রহ্ম, বিষ্ণু, শিবের কাছে যাওয়া যাবে না; কারন কোরানের আলোকে অন্য সব ধর্ম মিথ্যা। সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারীরা এ কথা গুলো বলার মাধ্যমে তারা যে নিজেদের কে একটা মূর্খ,
নির্বোধ ভণ্ড হিসাবে প্রমাণ করেসেই কথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না

কোরানে সব চেয়ে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে শির্ক এর জন্যযা এমন এক পাপআল্লা কখনো ক্ষমা করেন নাশির্কের কোন ক্ষমা নাই
তোমরা আল্লাহ্ ইবাদত কর  কোন কিছুকে তার শরীক করো না(:৩৬)

নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করবেন না, আর তাঁর থেকে ছোট যাবতীয় গুনাহ যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করে দেবেন, আর যে কেউ আল্লাহ সাথে শির্ক করে সে ভীষণ ভাবে পথ ভ্রষ্ট হয়। (৪:১১৬)

এবং আল্লাহ সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যকে ডেকো না। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সবকিছুই ধ্বংসশীল, কেবল আল্লাহ সত্তাই ব্যতিক্রম। শাসন কেবল তাঁরই এবং কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। (২৮:৮৮)

আপনার রব-এর কাছ থেকে আপনার প্রতি বা ওহী হয়েছে আপনি তারই অনুসরণ করুন, তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই এবং মুশরিকদের (মূর্তিপূজারিদের) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। (৬:১০৬)

কি এই শির্ক? যে পাপের জন্য আল্লা কখনো ক্ষমা করবেন না বলেছেন।
মুশরিক কারা?
তাঁর অর্থাৎ আল্লাহ্ পরিবর্তে তারা অর্থাৎ মুশরিকরা নারীমূর্তিকে ডাকে অথার্ৎ লাত, উযযা, মানাত ইত্যাদি নারী মূর্তিসমূহের উপাসনা করে। এবং তারা প্রতিমা পূজায় শয়তানের আনুগত্য করে বিদ্রোহী অর্থাৎ অবাধ্য শয়তানকেই অর্থাৎ ইবলীসকেই ডাকে অর্থাৎ এসব প্রতিমা পূজার মাধ্যমে মূলত: শয়তানেরই তাঁরা উপাসনা করে। (তাফসীর জালালাইন: প্রথম খণ্ড, সূরা নিসা-৪, আয়াত-১১৭, পৃষ্ঠাঃ ৮৯৫)

শির্ক অর্থ হচ্ছে আল্লাহ সাথে অন্য কাউকে শরীক বা অংশীদার করা। আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু বা কারো ওপর আল্লাহ্ ক্ষমতা আরোপ করা বা আল্লাহ্ শরীক করাকে আরবিতে শিরক বলে।(৪.) আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইলাহ অর্থাৎ হুকুম দাতা বা উপাস্য বলে মনে করাও শিরক। আর যে শিরক করে সে মুশরিক। দেবদেবীদের বা মূর্তিকে আল্লাহ মনে করা শির্ক। প্রতিমা ইত্যাদির পূজাপাট শির্কের অন্তরভূক্ত। পয়গাম্বর ও ওলীদের জ্ঞান ও শক্তি-সামর্থ্যে ইত্যাদি গুণে (অর্থাৎ কোন ব্যক্তি বিশেষ কে পূজা করা) আল্লাহ্ সমতুল্য মনে করাও অন্যতম শিরক।(৫.) তাহলে আল্লাহ্ সাথে শরীক করে শিব, ব্রহ্ম বা অন্য কোন দেবদেবীকে এবং তাদের মূর্তিসমূহকে সর্বশক্তিমান মনে করে উপাসনা করা শিরক।

শিরকের নীচে যে কোনো গুনাহ(পাপ) আল্লাহ ক্ষমা করবেন; কিন্তু শিরক কখনই ক্ষমা হবে না। মুশরিকদের জন্য শাস্তিই অবধারিত। কাজেই চুরি করা ও অপবাদ আরোপ করা ইত্যাদি পাপ আল্লাহ স্বীয় কৃপায় ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু যে যখন রাসূলের আদেশ থেকে গা ঢাকা দিয়ে মুশরিকদের (মূর্তিপূজারীদের) সাথে গিয়ে মিলিত হলো, তখন তার ক্ষমাপ্রাপ্তির সম্ভাবনাও বাতিল হয়ে যায়। আল্লাহ ছাড়া অন্যের পূজা করাই কেবল শিরক নয়, বরং মহান আল্লাহ্ আদেশের বিপরীতে অন্য কারও আদেশ পছন্দ করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত। শিরকের তাৎপর্য হচ্ছে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো সৃষ্ট বস্তুকে ইবাদত(প্রার্থনা) কিংবা মহব্বত(ভালোবাসা) ও সম্মান প্রদর্শনে আল্লাহ্ সমতুল্য মনে করা।  মূর্তিপূজা শয়তানেরই আনুগত্য ও তাকে খুশি করার নামান্তর।(৬.)

আর আল্লাহ্ সাথে শিরক বা অংশীদার করার শাস্তি হচ্ছে….
নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ্ অংশীস্থাপন করবে, আল্লাহ তাঁর জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তাঁর বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর এরুপ অত্যাচারীদের জন্যে কোন সাহায্যকারী থাকবে না।(৫:৭২)

অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে(মূর্তিপূজারীদের) যেখানে পাবে হত্যা কর, তাদেরকে পাকড়াও কর, অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁঠিতে তাদের জন্য ওৎঁ পেতে থাক; কিন্তু যদি তারা তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও; নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(৯:৫)

কিতাবীদের মধ্যে যারা আল্লাহ প্রতি বিশ্বাস রাখে না এবং পরকালেও নয় এবং আল্লাহ ও তার রাসূল যা কিছু হারাম(নিষেধ) করেছেন তাকে হারাম মনে করে না এবং সত্য দ্বীনকে(ইসলামকে) নিজের দ্বীন(ধর্ম) বরে স্বীকার করে না, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর, যে পর্যন্ত না তারা নত হয়ে নিজ হাতে জিজিয়া দেয়। (৯:২৯)

অতএবঃ বুঝায় যাচ্ছে…. সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারী দালাল, হিন্দু ধর্মগুরুরা ইসলাম সর্ম্পকে বিন্দু মাত্র ধারণা না রেখে; ইসলাম কে হিন্দুধর্মের সাথে এক করার ব্যর্থ প্রয়াস করে।
অথচ কোরানের আলোকে সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারী হিন্দু ধর্মগুরুরাই হচ্ছে মহা জাহান্নামি পাপিষ্ঠ! কারন কোরানে পরিষ্কার বলা হয়েছে আল্লাহ্ সাথে কাউকে শরীক, অংশীদার না করার জন্য; কিন্তু আল্লাহ্ সাথে কৃষ্ণ, চৈতন্য, শিব কে অংশীদারি করে, এরা বলে ঈশ্বর, গড, আল্লাহ, কৃষ্ণ, শিব সব এক, একই বস্তু; তাই এরা সবাই ক্ষমা পাওয়ার অযোগ্য অপরাধী আল্লাহ্ সাথে অংশীদার স্থাপনকারি মুশরিক এবং এরা সবাই ছিলেন মূর্তিপূজারী। তাই এদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম। শুধু তাই নয় ইসলামের আলোকে এরা কতল যোগ্য।

কোরান থেকে উপরিউক্ত তথ্য তুলে ধরার উদ্দেশ্য হচ্ছে অনুকূল পন্থী সহ অন্যান্য সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারী যত দল আছে তাদের ভণ্ডামির মুখোশ উন্মোচন করা। মুশরিক অনুকূল ঠাকুর তার চেলাকে দিয়ে, মন গড়া অপ ব্যাখ্যা দিয়ে “রাসূল গীতা” নামক বই লেখায়, কোরানের আয়াতকে সুবিধামত ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলামকে হিন্দু ধর্মের সমার্থক হিসাবে দেখানোর অপচেষ্টা করে। প্রথম কথা হচ্ছে সে যখন ইসলামকে ঈশ্বর প্রদত্ত একটা সত্য ধর্ম বলে প্রচার করে তবে সে কেন নিজে মুসলিম হল না? কারন ইসলামকে সত্য মানলে অন্য কোন ধর্ম পালন করার কোন সুযোগ নাই। সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে এরা হিন্দুদের কাছে পরোক্ষ ভাবে ইসলামের মহিমা প্রচার করে অথচ মন্দিরে মন্দিরে মুশরিক অনুকূল ঠাকুর কে ঈশ্বর জ্ঞানে উপাসনা করে; কিন্তু এরা কি চোখে দেখা না কোরানের নিদের্শ মতে কোন ব্যক্তি বিশেষ ঈশ্বর সমতুল্য মনে করাও অন্যতম মহাপাপ শিরক; যার শাস্তি হবে জাহান্নামের আগুন। আর দেখবেও বা কিভাবে এদের গোপন উদ্দেশ্য হচ্ছে আরব সাম্রজ্যবাদের প্রসার করা। হিন্দুদেরকে বোকা বানিয়ে নিজেদের আখের গোছানো।

অনেক হিন্দু দাবি করে মোহাম্মদ ছিলেন একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি। কিন্তু তারা কি জানে নবী মোহাম্মদ কিভাবে মূর্তিপূজারি, মুশরিক দের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন? তারা যখন মোহাম্মদকে একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি বলে মানে, কিন্তু তবে এদের উচিৎ নয় কি? মুসলমানি করে নেয়া।
সমন্বয়কারীরা বলবে কোরান দেয়া হয়েছিল অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য, আমাদের জন্য না। যদি তাই হয়, তবে আপনাদের ঈশ্বর মানে আল্লাহ আবার কোরানে কেন বললেন? নিশ্চয়ই আল্লাহ নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন(ধর্ম) ইসলাম। এই কথা বলে মানুষের মধ্যে কেন বিবাদ সৃষ্টি করলেন? একটা মিথ্যাকে আড়াল করার জন্য আর কত মিথ্যার রচনা করবেন?

যখন কোন হিন্দু মেয়ে প্রেমের ফাঁদে পড়ে কোন মুসলমান ছেলেকে বিয়ে করে, তখন সেই মেয়েটিকে কোন ভাবেই দোষ দেওয়া যায় না। দোষ হচ্ছে মেয়েটার পরিবার, হিন্দু সমাজ এবং ধর্মগুরুদের। কারণ ছোটবেলা থেকেই মেয়েটি শুনে আসছে, সব ধর্ম সমান। সব ধর্মের মধ্যে দিয়েই ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব। অতএবঃ সর্ব ধর্ম সমান হলে ধর্মান্তরিত হতে অসুবিধা কোথায় আর? কাজেই এই সব ভুল কথা শুনে শুনে কোন হিন্দু মেয়ে যদি, কোন মুসলমান ছেলেকে বিয়ে করে; একিভাবে কোন হিন্দু ছেলে যদি মুসলমান মেয়েকে বিয়ে করে মুসলিম হয়; তবে দোষ দিতে হবে তাদের যারা ঐ সব মিথ্যাচার করে চলেছে।

যুগের পর যুগ ধরে হিন্দুদের তেজ, শক্তি, সামর্থ্য, জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, এই সব কিছুই জোঁকের মত চুশে নিয়ে হিন্দুদের কে আত্মরক্ষায় অসামর্থ্য, একটা নির্বোধ জাতিতে পরিণত করেছে; সর্বমতের, সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারী গুরু, বৈষ্ণবরা; অহিংসাবাদের ভাঁওতাবাজি করা গান্ধির মত রাজনীতিবিদ, সেকুলার বুদ্ধিজীবীরা। সনাতন ধর্ম বলে হিংসা কর না, সহিষ্ণু হও, ক্ষমা কর, দয়া কর। কিন্তু বাস্তবতা বর্জিত দিব্য তুরীয় ভাব দিয়ে ধর্ম এবং জাতি কোনটা, কেই রক্ষা করা য়ায় না, তার জন্য প্রয়োজন হয় কাণ্ডজ্ঞানের। সনাতন ধর্ম কখনও অন্যায়কারী বা দুষ্কৃতকারীকে ক্ষমা করতে বা তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে বলেনি। পক্ষান্তরে অন্যায়কারী ও দুষ্কৃতকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবার কথাই বলে বলছে।
হিন্দুরা বলে ঈশ্বর এক, তাঁর কাছে পৌঁছানোর অনন্ত পথ, সব পথেই তাঁর কাছে পৌঁছনো যায়, ভক্তি-ভালোবাসা দিয়ে যে-কোনো নামেই তাকে ডাকা যায়। ধর্ম সবই সমান, ঈশ্বর-আল্লা, রাম-রাসূল সবই এক। “ঈশ্বর আল্লা তেরে নাম”, “যত মত তত পথ”, ইসকন বলে “মোহাম্মদ(স) ছিলেন একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি, শ্যামসুন্দর শ্রীকৃষ্ণকেই কোরানে ভগবান বলে স্বীকার করা হয়েছে”; ইত্যাদি এই সব কথা হিন্দুরা বলেছে, মেনেছে আর কেউ মানেনি। সর্ব ধর্ম সমন্বয়কারী, সর্বধর্মে সমদর্শী শ্রী রামকৃষ্ণদেব, সাঁইবাবা, অনুকুল ঠাকুর ইত্যাদি এই চরিত্রগুলো শুধু হিন্দুরই আদর্শ হয়ে আছে। হিন্দুদেরই ধর্মগুরু এবং হিন্দু নেতাদের দেখা যায় গীর্জায় গিয়ে খ্রীষ্টানদের সঙ্গে প্রভু যীশুর সামনে প্রার্থনা করতে। রামকৃষ্ণমিশন সহ আরো অনেক কে দেখা যায় বড়দিন পালন করতে। হিন্দুকে দেখা যায় মাজারে গিয়ে প্রার্থনা করতে, সম্মান জানাতে, মাজারে পশু উৎসর্গ করতে। ইসকনকে দেখা যায় ইফতার পাটির আয়োজন করতে; এভাবে ধর্মীয় সীমারেখা মুছে দেবার চেষ্টা করতে শুধুমাত্র হিন্দুদের কে দেখা যায়। সর্ব ধর্ম সমন্বয় করার মহান দায়িত্ব জেন শুধু হিন্দুদেরই।
অপর দিকে পৃথিবীতে অন্য দুটি বিশাল সম্প্রদায় মুসলিম ও খ্রীষ্টান; তারা কি বলে?
মুসলমানরা বলে একমাত্র “আল্লাহ” ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই, যারা আল্লাহ্ স্থানে অন্য কারো উপাসনা করে তারা মুশরিক। ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ্ একমাত্র সত্য দ্বীন(ধর্ম)। আল্লাহ্ কাছে পৌঁছনোর একমাত্র পথ হচ্ছে ইসলাম। আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন(ধর্ম) গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো আল্লাহ্ পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না। তাকে কোরান অনুমোদিত নাম ছাড়া অন্য কোন নামে ডাকা যায় না। মুসলিমরা ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মকে ধর্ম বলেই স্বীকার করেন না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের কার্যতঃ মানুষ বলেই স্বীকার করেন না। যারা ইসলাম গ্রহণ করে না তারা অবিশ্বাসী, সীমা লঙ্ঘনকারী(কাফের)। তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। জগৎতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা আর মুসলমানে পরিণত করাই তাদের উদ্দেশ্য। মুসলমানদের কোনো (ধর্মগুরু) মৌলানা, হুজুর ভুল করেও কখনো সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে না। যদি কোন মৌলানা বলে “ধর্ম সবই সমান, ঈশ্বর আর আল্লা, রাম-রসূল সবাই এক” তবে তিনি যত বড় মৌলানা হোক না কেন, মুসলমানদের যতই প্রিয় হোক না কেন; এই কথা বলার সাথে সাথেই মুসলমানরা তাকে “মোনাফেক”(বিশ্বাসঘাতক), “মুরতাদ”(ইসলাম ত্যাগী) বলে আখ্যা দিবে। সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে তার ঘাড়ে মাথা থাকবে কিনা সেটাই সন্দেহ!!! কোনো মুসলমান নেতাকে, মৌলানাকে কোনো মন্দিরে গিয়ে পূজা দিতে, প্রার্থনা করতে, কেউ কি কোনো দিন দেখেছেন? নিশ্চয় দেখেননি। সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা শুধু হিন্দু ধর্মগুরুরা বলতে পারে।
খ্রীষ্টানরাও মুসলমানদের অনুরূপ। তারাও কখনো বলে না যীশু আর কৃষ্ণ এক কিন্তু এই কথা হিন্দুরা বলে। খ্রীষ্ট মতে সব মানুষ জন্মপাপী। জন্মের পর যে শিশুকে খ্রীষ্টমতে শুদ্ধিস্নান করানো হয় না। তার নরকযন্ত্রণা অবধারিত। প্রভু যীশুর আশীর্বাদ ছাড়া কেও ঈশ্বরের সানিধ্য পাবেন না; এবং কেও স্বর্গে যেতে পারবেন না।

ইসলাম ও খ্রীষ্টান তাদের জন্মলগ্ন থেকেই অপর ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষকে ছলে-বলে-কৌশলে নিজ মতবাদে দীক্ষিত করে; তাঁদের মতবাদ প্রচারও বিস্তারে নিয়োজিত। ফলে জন্ম থেকে দু-হাজার বৎসরে খ্রীষ্ট ও চৌদ্দশ বৎসরে ইসলাম পৃথিবীর প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায়। উভয় সম্প্রদায়ই সু-সংগঠিত। নিজ নিজ মতবাদ প্রচার ও বিস্তার ঘটানো তাদের প্রধান কর্মসূচির অঙ্গ। উভয় সম্প্রদায়ের প্রচারকরা সংগঠিত শক্তি ও অর্থের বলে পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তেই তাঁদের মতবাদ বিস্তারে সচেষ্ট। ইসলামের প্রবর্তক হজরত মোহম্মদ সামরিক শক্তিতে শক্তিমান হয়ে ঘোষণা করেছিলেন ইসলামের দ্বীন একমাত্র মহাসত্য। পৃথিবীর সব মানুষকে ইসলাম গ্রহণ করতে হবে। মুসলিমরা তাদের সন্তানকে, শিশু বয়সেই শিখায় কে তাদের মিত্র এবং কে তাদের শক্র। ইহুদী-নাসারা, মুশরিকরা(পৌত্তলিক), কাফের(অবিশ্বাসী), সর্বপ্রকারে প্রতিটি অমুসলিম সম্প্রদায় মুসলমানদের শত্রু; যারা ইসলাম গ্রহণ করবে না তারাই মুসলমানদের শত্রু। ইসলাম বলে এক মুসলাম আর এক মুসলমাননের ভাই। কিন্তু হিন্দু সমাজে এমন কোন রীতি নেই। তাদের শেখানো হয় সব ধর্ম সমান, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই, কেও হিন্দুদের শত্রু নয়। তাই হিন্দুরা তাদের কাছে সব চেয়ে সহজ শিকার।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন-
“অতএব যদি মুসলমান মারে আমরা পড়ে পড়ে মার খাই তবে জানব, এ সম্ভব করেছে শুধু আমাদের দুর্বলতা। আমার প্রতিবেশীদের কাছে আপীল করতে পারি তোমরা ক্রুর হইও না, তোমরা ভাল হও, নর হত্যা উপরে কোন ধর্মের ভিত্তি হতে পারে না। -কিন্তু সে আপীল দুর্বলের কান্না” (রবীন্দ্রনাথ রচনাবলী, জন্ম শত বার্ষিক সংস্করণ, ত্রয়োদশ খণ্ড, পৃ-৩৫৬)

আমি ইসলামের আকর গ্রন্থ কোরান বারবার পড়ে, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছি। ভেবে পাই না কি করে মানুষ ইসলামকে সনাতন বৈদিক ধর্মের সমার্থক বলে। বিদগ্ধ ব্যক্তিদের “সব ধর্মইতো সমান” এমন নির্বোধ উন্মাদসুলভ বক্তব্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করি।
হিন্দু সমাজের মধ্যে সর্ব্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী হিন্দু-ধর্মগুরুরা এবং হিন্দু-রাজনৈতিক নেতারা হয় ইসলামী তত্ত্ব পড়েন না; ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই জানেন না; অথবা তারা সব কিছু জেনে বুঝে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে; এরা অর্থহীন প্রলাপ বকে আর ভিত্তিহীন জনপ্রিয়তার পুজি নিয়ে অন্নসংস্থান করে। নয়তো তারা কাপুরুষতার এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, সত্য কথা বলার সাহস পর্যন্ত তারা হারিয়ে ফেলেছে। ইসলামের সত্যতা তুলে ধরার মত হিম্মতও তাদের নেই। সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে এরা তৃপ্তিবোধ করেন। তাদের মধ্যে একটাও পিতার পুত্র নেই যিনি প্রকৃত সত্য তুলে ধরবেন। তারা এখন পদলেহনকারী দালালে পরিণত হয়েছে।
অত্যন্ত দুখের বিষয়, আজ হিন্দু জাতি সনাতন ধর্মের প্রকৃত নির্দেশ থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছে। সনাতন ধর্ম বিপথগামী হয়ে পড়েছে। হিন্দুরা বর্তমানে সনাতন ধর্মের নামে যা অনুসরণ করে চলেছে, তাকে সনাতন ধর্ম বললে সত্যের অপলাপ করা হয়। সনাতন ধর্মের সেই সাহস ও বীরত্ব তেজবীর্র বাণী, সম্পূর্ণ ভুলে গিয়ে হিন্দু জাতি পরিণত হয়েছে এক কাপুরুষের জাতিতে।

পরিশেষে সকল হিন্দু ভাই/বোনদের বলব যারা সর্বমতের এবং সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে এরা হচ্ছে একটা প্রতারক চক্র এদের থেকে সাবধান থাকুন। আমি বলব… “যে গুরু বলে ঈশ্বর, আল্লাহ এক; রাম, রসূল, কৃষ্ণ এক, বেদ, কোরান, বাইবেল সব এক; ধর্ম সবই সমান; সে গুরুকে ভণ্ড গুরু বলে জানিবে, সেই গুরুর চ্যালাচামুণ্ডাদের ধূর্ত গোষ্ঠী বলে জানবেন।”

তথ্যসূত্রঃ
১. তাফসীর ইবনে কাসীরচতুর্থ থেকে সপ্তম খণ্ডপৃষ্টা৫৭
২. তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড-১৬, পৃষ্ঠাঃ ৮২৭
৩. তাফসীর ইবনে কাসীর, খণ্ড-১৬, পৃষ্ঠাঃ ৮৩০
৪. যার যা ধর্ম, ‍পৃষ্ঠা- ৪৫৬
৫. তাফসীরে জালালাইন: দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা- ৩৩৯
৬. তাফসীরে জালালাইন: প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৮৯৫-৮৯৬

1 comment:

  1. আপনি হয়তো জানেন না রবীন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণ সম্বন্ধে কি বলেছেন। আর একটা প্রশ্ন জানতে ইচ্ছে হয়, যদি একটাই পন্থা থাকে, তাহলে আস্তিকবাদে, বা সনাতন ধর্মে চারটে যোগ, ষড়দর্শন কেন হল ?
    সেখান তো প্রত্যেকের পন্থা সমপূর্ণ আলাদা, কিন্তু উদ্দেশ্য একটাই।
    এর আপনি কি ব্যাখ্যা দেবেন ?
    হিন্দু ধর্মের মধ্যেই তো এত পথ ।

    ReplyDelete

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ঋগ্বেদ ১/৯০/৯

  ওম্ শং নো মিত্রঃ শং বরুণঃ শং নো ভবত্বর্যমা। শং ন ইন্দ্রো বৃহস্পতিঃ শং নো বিষ্ণুরুরুক্রমঃ॥ ঋগ্বেদ ১।৯০।৯॥ - হে সচ্চিদানন্দানন্তস্বরূপ, হে ন...

Post Top Ad

ধন্যবাদ