প্রতি পাঁচ মধ্যে একজন ভারতীয় নিজেদের জীবদ্দশায় ক্যান্সারের কবলে পড়বেন, এবং এই মারণরোগে মৃত্যু হবে ১৫ জনের মধ্যে একজন ভারতীয়ের। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)সম্প্রতি জানিয়েছে যে, আগামী সময়ে ভারতে ক্যান্সার আক্রান। তাদের সদ্য প্রকাশিত একটি রিপোর্টে আশঙ্কাজনক এই খবর শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা WHO)। ২০০ প্রকারের ও বেশি ক্যান্সার (কর্কট রোগ) রয়েছে, কিন্তু এটা শুধু নামে ভাগ করা হয়েছে বিশেষত ক্যানসার অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। বর্তমান আধুনিক চিকিৎসায় ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা না করে ক্যানসারের দ্বারা তৈরী প্রোডাক্ট কে নষ্ট করা হয় আর দেখানো হয় ক্যান্সার ঠিক হয়েছে কিন্তু তা হয় না রুগী ধিরে ধীরে মারা যায়। দেখা গেছে ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসার কারনে রুগী মৃত্যুবরন করে। মানুষ যদি নিজেদের ভোজন ঠিক করে নেই তাহলে শরীরে রোগ বাঁসা বাধতে পারবে না। আমাদের শরীর জুড়ে লিম্ফ নোড ছড়ানো রয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই লিম্ফ নোডের সাথে জড়িত। লিম্ফ নোডের ক্যান্সারকেই লিম্ফোমা বলে। রক্ত কোষের ক্যান্সারকেই লিউকেমিয়া বলে। এই রক্তকোষগুলো হাড়ের মজ্জা থেকে জন্ম নেয়।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে ভারতে তামাকজাত দ্রব্য সেবন থেকে ক্যানসার হবে মোট সংখ্যার প্রায় ২৭.১ শতাংশের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন উত্তরপূর্ব ভারতের মানুষ। এরপরেই তালিকায় রয়েছে গ্যাসট্রোইন্টেসটিনাল ট্র্যাক্ট এবং স্তন ক্যানসারের সংখ্যা। পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে ফুসফুস, মুখ, পাকস্থলী এবং ইসোফেগাসের ক্যানসার। মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যাবে স্তন এবং সার্ভিক্স ইউটেরি-র ক্যানসার।
মানবদেহে যে সকল স্থানে ক্যান্সার ধরা পড়েছে তা হল প্রস্টেট গ্রন্থি, স্তন, জরায়ু, অগ্ন্যাশয়, রক্তের ক্যান্সার, চামড়ায় ক্যান্সার ইত্যাদি। একেক ক্যান্সারের জন্য একেক ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে।
তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ হচ্ছে:
অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি(কেমেথেরাপিতে শুধু ক্যান্সারের কোষই মারা যায় না অনেক ভালো কোষও মারা যায়। অর্থাৎ, এর খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে ব্যাপক), হরমোন থেরাপি এ সকল পদ্ধতি ক্যান্সার কে সম্পূর্ণ ঠিক করতে সক্ষম নয়। এই সব পদ্ধতির কারনে রোগ আরো প্রভাবিত হয়।
প্রত্যেকদিন নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করা যেমন-দৌড়ানো, সাইকেল চালনো, নাচ করা, হাঁটা। সপ্তাহে কমপক্ষে ২দিন ভারী ব্যায়াম করতে হবে। ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। চর্বিজাতীয় পদার্থ কম খাওয়া। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ অর্থাৎ Animal Protine খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। যে কোন প্যাক ফুড খাদ্য হিসেবে গ্রহন না করা। আমার ব্যক্তিগতও মত এই যে কেমিক্যাল যুক্ত দাঁতের পেষ্ট ব্যবহার বন্ধ করা দরকার। কোন এ্যলুমিনিয়ামের পাত্রে খাওয়ার গরম না করা এতে ক্যান্সার সেলের গ্রোথের সম্ভবনা প্রচুর। এ ছাড়া প্লাসটিক ব্যবহার বন্ধ করা উচিত, বিশেষত পলিথিনের ব্যাগের গরম খাওয়ার না রাখা। রোজ রান্নার সময় যে হলুদ ব্যবহার করা হয় তা প্রাকৃতি হলুদ ব্যবহার করা দরকার, বর্ত্তমান সময়ে প্যাক হলুদের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যান্সারের বৃদ্ধি হচ্ছে, কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন ক্যান্সার দূর করতে সহায়তা করে। কারকিউমিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে তাদের মৃত্যু ঘটায়। ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফলমূল এবং আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া রোগ একে বারে নির্মূল করতে হলে মিলেট খাওয়া দরকার। Dr. Khadar Vali কয়েক বছর গবেষণা করে দেখেছেন পাঁচ রকম মিলেট শস্য পর পর ২ দিন আলাদা ধরনের আহার হিসেবে গ্রহণ করলে ক্যান্সার নিরাময় হয়। এই মিলেট শরীরে গেলে কোষে গ্লুকেজের মাত্রা নিয়ন্ত্রন থাকে ও এই মিলেট গুলিতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকায় কোষ বৃদ্ধি হার ধিরে ধিরে কমতে থাকে। এবং একসময় শরীর সুস্থ হয়। ২০০৫ সালে চাইনা স্টাডি তে বলা হয়েছে animal protine ক্যন্সার বৃদ্ধির কারন। এ ছাড়াও মিলেট গুলোতে অনেক মারাত্বক রোগ নিরাময় হয়ঃ
ক্যান্সার নিয়ে লেখা জি. এডওয়ার্ড গ্রিফিন এর বই ‘ওয়ার্ল্ড উইদাউট ক্যান্সার’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া সত্ত্বেও বইটি অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে দেওয়া হয়নি। কারণ বইটিতে তিনি ক্যান্সার নিয়ে ব্যবসা না করে বরং বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিকে উৎসাহিত করতে বলেছেন। ড. হ্যারল্ড ডব্লিউ. ম্যানার তার বই ‘ডেথ অফ ক্যান্সার’-এ বলেছেন বিকল্প পদ্ধতিতে চিকিৎসায় ক্যান্সার ৯০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে ভালো হয়।
তাঁর মতে প্রচলিত ওষুধের বাইরে কীভাবে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা যায়:
যাদের ক্যান্সার হয়েছে তাদের আতঙ্কিত না হয়ে বরং ক্যান্সার কী তা বুঝা উচিত। ক্যান্সার যেহেতু ভিটামিন বি ১৭ এর ঘাটতির কারণেই হয় সুতরাং এই পুষ্টি উপাদানটি আছে এমন খাবার খেতে হবে।
প্রতিদিন গমের কুঁড়ি খেতে হবে। কারণ এতে আছে তরল অক্সিজেন এবং ভিটামিন বি ১৭ এর নির্যাস রুপ ল্যায়েট্রাইল। যা সবচেয়ে সক্রিয় ক্যান্সাররোধী উপাদান।
এছাড়া আপেল এবং অ্যাপ্রিকোট-এও আছে ভিটামিন বি ১৭ এর নির্যাস। যাকে অ্যামিগডালিনও বলা হয়।
এছাড়াও আরো যেসব খাবারে অ্যামিগডালিন বা ভিটামিন বি ১৭৮ আছে সেসব হলো: আপেল, অ্যাপ্রিকোট, পিচ, পিয়ার্স, প্রুন বা শুকনো বরইতে আছে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ভিটামিন বি ১৭।
শীম, ডালের অঙ্কুর, লিমা শীম এবং ছোলাতেও আছে ভিটামিন বি ১৭।
তিতা কাজুবাদাম এবং ভারতীয় কাজুবাদামের শাঁসেও ভিটামিন বি ১৭ আছে। ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, র্যাস্পবেরি এবং স্ট্রবেরিতেও আছে ভিটামিন বি ১৭। লিলেন বা ফ্ল্যাক্স সীড। ওটস, বার্লি, ব্রাউন রাইস, গম, লিনসীড এবং রাই এর ছাতু। এছাড়া অ্যাপ্রিকোট বীজ, ছত্রাক, আকাঁড়া চাল, ধান এবং কুমড়োতেও ভিটামিন বি ১৭ পাওয়া যায়।
এসব খাবার নিয়মিতভাবে খাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনও করতে হবে। ফাস্টফুড ও প্যাকটজাত খাবার না খাওয়া, সময়মতো খাবার খাওয়া, শরীরচর্চা করা, মোটা না হওয়া এবং মানসিক চাপ সামলানো।
একুশ শতকে ক্যান্সার এত বেশি বেড়ে গেছে কেন? অথচ ৫০ বছর আগেও এমন ছিল না। আসলে আমাদের জীবন যাত্রার পরিস্থিতি এবং খাদ্য বদলে গেছে। আমাদের পূর্বসুরিরা প্রকৃতির কোলে আরো শান্তিপূর্ণ জীবন-যাপন করতেন। তারা নিজেরাই নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করতেন। তারা কখনোই খাবারে রাসায়নিক কীটনাশক বা সার ব্যবহার করতেন না। তারা একেবারে প্রাকৃতিক উৎস থেকে খাবার খেতেন। তারা কখনোই তাদের চাষাবাদের মাঠ বিষাক্ত করতেন না। আশে-পাশের জলের উৎস ও নদী দূষিত করতেন না।
কিন্তু এখন আমরা চরম ব্যস্ত জীবন-যাপন করি। ২৪ ঘন্টাও যেন কারো কারো জন্য যথেষ্ট নয়। সময় মতো আমরা খাবার খাই না। সারাক্ষণই শুধু কী করে আরেকটি টাকা বেশি কামানো যায় সেই চিন্তায় থাকি। আমরা এতটাই হুড়োহুড়ির মধ্যে থাকি যে নিজের স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখার সময় পাই না। তীব্র মানসিক চাপ সম্পন্ন জীবন-যাত্রার ধরন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই এখনকার রোগ-বালাইয়ের সবচেয়ে বড় দুটি উৎস।
একটা সময়ে স্কার্ভি রোগ নিয়েও প্রচুর ব্যবসা করা হয়। পরে প্রমাণিত হয় স্কার্ভি কোনো রোগ নয়। ঠিক তেমনি ক্যান্সারও কোনো রোগ নয়। বরং দেহে একটি ভিটামিনের ঘাটতির কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
তথ্য সূত্র: হেলথভেইনস
২) Cancer Research: https://www.researchgate.net/.../51065409_The_Death_of...
৪) Dr Khadar: https://www.youtube.com/watch?v=nwFnPzjHoSw
(এই লেখায় যেসব তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তা করা হয়েছে হেলথ ভেইনস নামের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে, ও কিছু ওয়েবসাইট থেকে। এখানে আমি কোনো চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছি না। এসব তথ্য অনুযায়ী ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে চাইলে সম্পূর্ণতই নিজ দায়িত্বে এবং ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে করুন)

No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ